রিহ্যাবের দুই পরিচালকের রিমান্ড না চাওয়ায় আদালতের অসন্তোষ
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে দেশের আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) দুই পরিচালককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তবে আদালতে আসামিদের রিমান্ড চাওয়া হয়নি। রিমান্ড না চাওয়ায় শুনানির সময় আদালতের বিচারক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আজাদ রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমণ্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আশফাক রাজীব হাসান আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন মো. শাকিল কামাল চৌধুরী ও প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন সিকদার।
আইনজীবী বলেন, এ আসামিদের রিমান্ড না চাওয়ায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আসামিরা স্বীকৃতমনে ধর্ষণকারী। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন ছিল বলে আদালত মনে করেন।
ধর্ষণের ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে ধানমণ্ডি থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী এক নারী। এজাহারে ওই নারী বলেন, আসামি শাকিল কামাল চৌধুরীর সঙ্গে সাত-আট মাস আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় আমার। আমি তাঁকে চাকরির কথা বললে তিনি আমাকে ঢাকায় আসতে বলেন। গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে আমি ধানমণ্ডি মডেল থানাধীন ১৩ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়িতে শাকিল কামাল চৌধুরীর অফিসে যাই এবং সৌজন্য সাক্ষাৎ করি।
এজাহারে বলা হয়েছে, আমি আমার আদাবর থানার বর্তমান ঠিকানায় অবস্থানকালে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে আমার ভাইবার নম্বরে কল করে শাকিল চাকরির জন্য তাঁর অফিসে যেতে বলেন আমাকে। কথা মতো আমি বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর অফিসে যাই। তখন সেখানে শুধু শাকিল কামাল চৌধুরী ও মহিউদ্দিন সিকদারকে দেখতে পাই।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, সে সময় তারা দুজন আমাকে ধর্ষণ করেন। আমি চিৎকার করি। কিন্তু আশপাশে লোকজন না থাকায় কেউ এগিয়ে আসেনি। এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য তারা দুজন আমাকে হুমকি দেন। এরপর শাকিল বাথরুমে গেলে আমি মহিউদ্দিনকে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে পালিয়ে আসি।
এই ঘটনায় মামলা দায়েরের পর গতকাল রাতেই রিহ্যাবের দুই পরিচালক শাকিল কামাল চৌধুরী ও মহিউদ্দিন সিকদারকে গ্রেপ্তার করে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ। আজ তাদের আদালতে নেওয়া হয়। তবে রিমান্ড চায়নি পুলিশ।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের আওতাধীন ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়ক ডা. বিলকিস বেগম জানিয়েছেন, আগামী বুধবার ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত দুজনের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। অভিযোগকারী নারীর ফরেনসিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এতে তাঁর শরীরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের আলামত মিলেছে।