সাংবাদিক বেশে চাঁদা চেয়ে আটক যুবলীগ নেত্রী, ছেড়ে দিল পুলিশ
নওগাঁয় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে যুব মহিলা লীগের নেত্রী মমতাজ বেগম সাথী ও তাঁর সহযোগী জাকারিয়া হোসেনকে ধরে পুলিশে দেয় জনতা। পরে এ ব্যাপারে মামলা না হওয়ায় পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার চৌরাস্তার মোড়ে মিষ্টির দোকানে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবি করেন মমতাজ বেগম সাথী। এ সময় তাঁর সঙ্গে জাকারিয়া হোসেন নামে একজন ক্যামেরা বহন করছিলেন। সেখানে দোকানির সঙ্গে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে স্থানীয় জনগণ তাঁকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
কিন্তু পত্নীতলা থানার পুলিশ রাতেই কথিত সাংবাদিক মমতাজ বেগম সাথী ও তাঁর ক্যামেরাম্যান জাকারিয়া হোসেনকে ছেড়ে দেন। সাথী, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিমল কুমার চক্রবর্তী আজ শুক্রবার বিকালে বলেন, ‘চাঁদা দাবির অভিযোগে মমতাজ বেগম সাথী ও জাকারিয়াকে জনতা পুলিশের হেফাজতে দিয়েছিলেন, এটা সত্যি। কিন্তু ভুক্তভোগীরা তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগের মামলা না করায় গতকাল রাতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, ওই নারী রাণীনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি সে বিষয়ে আমি জানতাম না।’
ওসি আরো বলেন, ‘এটা আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। তাঁর বিরুদ্ধে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করা, তাঁর স্বামী অস্ত্র ও মাদকের মামলায় কারাগারে থাকার কথাও আমি জানতাম না।’
নওগাঁর পুলিশ সুপার (এসপি) প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আমার জানা মতে, চাঁদাবাজির বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। এজন্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখনও সময় আছে, যদি কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
মমতাজ বেগম সাথী উপজেলার দাউদপুর গ্রামের এবং জাকারিয়া হোসেন ফারাদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে আদালতে মামলাও বিচারাধীন রয়েছে। মমতাজ বেগমের স্বামী আশিকুজ্জামান বিপ্লব প্রায় দুই বৎসর ধরে অস্ত্র ও মাদক মামলায় জেলা কারাগারে রয়েছেন।
চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাণীনগর প্রেসক্লাব হতে মমতাজ বেগম সাথীকে গত ২০১৬ সালে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
এসব ব্যাপারে জানতে মমতাজ বেগম সাথী ও তাঁর সহযোগী জাকারিয়া হোসেনের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।