সেন্টমার্টিনে বিজিবিকে আরো সুসংগঠিত করা হবে : বিজিবির ডিজি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিদর্শন করেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সেনাবাহিনীর বিশেষ এক হেলিকপ্টারে করে তিনি সেন্টমার্টিন পৌঁছান। এরপর তিনি মোটরসাইকেলে চড়ে সেন্টমার্টিনের পুনরায় স্থাপিত বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
এ সময় বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, সেন্টমার্টিন ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বিজিবি, সীমান্ত সুরক্ষা ছাড়াও মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে দায়িত্ব পালন করবে এবং সেন্টমার্টিনে বিজিবিকে আরো সুসংগঠিত করা হবে।
মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম গত বছরের ২৮ মার্চ বিজিবির মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সেন্টমার্টিনে বিজিবির বিওপি পুনরায় স্থাপনের পর এটি বাহিনী প্রধানের প্রথম সফর। এ সফরে সীমান্ত নিরাপত্তাসহ বিজিবির বিভিন্ন কার্যক্রমের তদারকি করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে সেন্টমার্টিনকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করেছিল মিয়ানমার। মিয়ানমার সরকারের জনসংখ্যা বিষয়ক বিভাগের ওয়েবসাইটে তাদের দেশের মানচিত্রে সেন্টমার্টিনকে তাদের ভূখণ্ডের অংশ দেখানো হয়। ৬ অক্টোবর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও-কে তলব করে এর প্রতিবাদ জানায়। এরপর মিয়ানমার মানচিত্র থেকে সেটি পরিবর্তন করে।
এই সংকট নিরসনে ও বর্ডার ভিত্তিক নিরাপত্তা জোরদার করতে চলতি বছরের ৭ এপ্রিল থেকে সেন্টমার্টিনে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এর আগে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে তৎকালীন বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস) মোতায়েন ছিল।
এরপর থেকে সেন্টমার্টিনে বিজিবির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এত দিন ধরে কোস্টগার্ড সদস্যরা ওই সীমানা পাহারা দিয়ে আসছিল। কিন্তু চলতি ৭ এপ্রিল থেকে সেন্টমার্টিনে বিজিবির একটি বিওপি ক্যাম্প স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সেন্টমার্টিনে টহল দিচ্ছে বিজিবি।
কক্সবাজার সংলগ্ন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সৃষ্টি থেকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অন্তর্গত ছিল। ব্রিটিশ শাসনাধীন ১৯৩৭ সালে যখন বার্মা ও ভারত ভাগ হয় তখন সেন্টমার্টিন ভারতে পড়েছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় সেন্টমার্টিন পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে এটি বাংলাদেশের অন্তর্গত। ১৯৭৪ সালে সেন্টমার্টিনকে বাংলাদেশের ধরে নিয়েই মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা চুক্তি হয়।
সেন্টমার্টিন থেকে বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গা আটক করেছে কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি। বিভিন্ন সময় ওই এলাকায় দস্যুতার ঘটনাও ঘটে। এসব নিয়ন্ত্রণে সেন্টমার্টিনে একটি পুলিশ ফাঁড়িও রয়েছে। তবে বর্তমান সরকার মনে করছে, সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন দরকার।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহমদ বলেন, দ্বীপে বিজিবি মোতায়েনের ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার হয়েছে। এতে স্থানীয় অধিবাসী ও পর্যটকরা নিরাপদে থাকতে পারবে।