আদালত চত্বর থেকে আইনজীবীসহ দুই আসামিকে ফিল্মি স্টাইলে অপহরণ
পাবনায় প্রকাশ্যে আদালত চত্বর থেকে এক আইনজীবী এবং জামিনে থাকা দুই আসামিকে ফিল্মি স্টাইলে অপহরণের করেছে বাদীপক্ষের লোকজন। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পাবনা জজ আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ ইকবাল লিটন জানান, আজ সোমবার পাবনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতে মামলার চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল। শুনানি শেষে বিচারক দুই আসামি আবু সাঈদ মোল্লা ও শহিদ মোল্লার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান চৌধুরী দুই আসামিকে নিয়ে আদালত চত্বর থেকে বের হন। এ সময় একই মামলার বাদী মোছা. তানমিরা ইয়াসমিন আলিফের বাবা আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে ৯ থেকে ১০ জন সশস্ত্র যুবক তাঁদের টেনে হিচরে মাইক্রোবাসে তোলে। তাঁরা মাইক্রোর ভিতরে আসামি সাঈদ মোল্লা ও শহিদ মোল্লাকে রড দিয়ে বেদম পেটায়। আদালত চত্বরে পুলিশসহ শত শত মানুষ এ সময় উপস্থিত থাকলেও কেউ অপহরণকারীদের বাধা দেয়নি।
অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ ইকবাল লিটন আরো জানান, অপহরণকারীরা তাঁদের অপহরণ করে সরাসরি পাবনা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যান। পুলিশকে ফোন করার পর পুলিশ পিছু নেওয়ায় অপহরণকারীরা আইনজীবী সাইদুর রহমান চৌধুরীকে ছেড়ে দেয়। তারা দুই আসামিকে মারতে থাকে। পরে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারোফ হোসেন ওই দুই আসামিকে অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় আবু সাঈদ মোল্লা এবং শহিদ মোল্লাকে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হয়।
পাবনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ মোশারফ হোসেন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা অপহরণের পর কেন আমার অফিসে আনল তা আমি বুঝতে পারছি না। তবে আমি নিজে অপহরণকারীদের চর-থাপ্পর দিয়ে অ্যাডভোকেট সাহেব এবং অপর দুজনকে ছাড়িয়ে নেই।’
পাবনা জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন বলেন, ‘আদালত চত্বরে এ ধরনের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।’
পাবনার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার শামীমা আখতার মিলি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো এজাহার দেয়নি। দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ঘটনায় পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম পটল বাদী হয়ে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ ইকবাল লিটন।