মিন্নির জয়েন্টে জয়েন্টে বেত দিয়ে পিটিয়েছে
বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেছেন, মিন্নিকে পুলিশ লাইনে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁর জয়েন্টে জয়েন্টে বেত দিয়ে পিটিয়েছে পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশের একজন মহিলা মিন্নিকে লাথি মেরে চেয়ার থেকে ফেলে দেয়। পরে পিস্তল ঠেকিয়ে তাদের দেওয়া জবানবন্দিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। সেই স্বাক্ষর নিয়ে আদালতে জমা দেওয়া হয়।
আজ রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্নার চেম্বারে এনটিভি অনলাইনকে এ কথা বলেন মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।
মিন্নি ও তাঁর বাবা মোজাম্মেল আজ বেলা ১১টার দিকে জেড আই খান পান্নার চেম্বারে আসেন। এ সময় অনেক আইনজীবী মিন্নিকে দেখতে আসেন। আইনজীবীদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মিন্নি। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তাঁরা ওই চেম্বারে ছিলেন।
এ সময় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মিন্নিকে নির্যাতন করায় সে শারীরিকভাবে অসুস্থ। ঢাকায় তাঁর চিকিৎসা করাব।
মোজাম্মেল বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লঞ্চে করে রওনা দিয়েছি। সকাল সাড়ে ৭টায় সদরঘাটে এসে পৌঁছাই। হাইকোর্টে সকাল সাড়ে ১০টার পর এসেছি। এখানে আইনজীবীরা মিন্নির জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। সহযোগিতা করেছেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এখানে এসেছি।
এ সময় মিন্নির জন্য হাইকোর্টে আইনি সহায়তা দেওয়া অনেক আইনজীবী উপস্থিত হোন। সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না মিন্নিকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। মিন্নি সব আইনজীবীকে সালাম দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে স্থায়ী জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে জামিনে থাকাকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলা যাবে না বলে শর্ত দেন আদালত।
গত ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ একদল যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো দা দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় মিন্নি হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন; কিন্তু তাদের থামানো যায়নি। খুনিরা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়।
এ হত্যার ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ পরের দিন সকালে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন। মিন্নি ছিলেন সেই মামলার এক নম্বর সাক্ষী। পরে ১৬ জুলাই রাতে এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরের দিন বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।