জি কে শামীমকে ফাঁসানো হয়েছে : শুনানিতে আইনজীবী
জি কে শামীম প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি সরকারের অনেক প্রজেক্টে কাজ করছেন বিধায় তাঁর রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন চাচ্ছি।
আজ শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি চলাকালে এ কথা বলেন জি কে শামীমের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর আবদুর রহমান হাওলাদার।
শুনানিতে আবদুর রহমান বলেন, জি কে শামীম রাজনৈতিকভাবে ভিকটিমাইজ হয়েছেন। তাঁর যে অস্ত্র, সেগুলো বৈধ অস্ত্র। এগুলো কোনো অবৈধ কাজে ব্যবহৃত হয়নি।
আইনজীবী আরো বলেন, জি কে শামীমের কাছে যে টাকা পাওয়া গেছে তাও বৈধ। কেননা তিনি পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করছেন। আর ৫০০ মানুষ কাজ করলে তাদের প্রতিদিন টাকা দিতে হয়। তাই প্রতিষ্ঠানে এভাবে টাকা রাখা হয়েছে। তাই আসামির জামিন চাচ্ছি।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, জি কে শামীম বৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে টেন্ডারবাজি ও গরুর হাটে চাঁদাবাজি করতেন। তিনি দেহরক্ষী দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করতেন।
আজাদ রহমান বলেন, জি কে শামীমের দেহরক্ষী নিজস্ব। সরকারিভাবে অনুমতি নিয়ে রাখা হয়নি। একজন মন্ত্রীরও এতগুলো দেহরক্ষী থাকে না। জি কে শামীম দেহরক্ষী দেখিয়ে টেন্ডারবাজি করেন। আর তিনি দেশের একমাত্র ঠিকাদার না যে সব কাজ তিনিই পাবেন। প্রভাব খাটিয়ে তাঁর দেহরক্ষীরা অস্ত্র দেখিয়ে টেন্ডারবাজি করতেন। তাই তাঁকে ও তাঁর দেহরক্ষীদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহমুদা আক্তার অস্ত্র ও মাদক মামলায় জি কে শামীমের পাঁচ দিন করে ১০ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া তাঁর সাত দেহরক্ষীর প্রত্যেককে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) রকিবুল হাসান রাকিব এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে জানান, অস্ত্র ও মাদক মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জি কে শামীমের বিরুদ্ধে সাত দিন করে ১৪ দিন ও সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জি কে শামীমকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় পাঁচ দিন করে ১০ দিন ও সাত দেহরক্ষীকে চার দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
জিআরও বলেন, সাত দেহরক্ষী হলেন দেলোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের নিকেতনের অফিসে অভিযান চালিয়ে জি কে শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীকে আটক করে র্যাব। সে সময় জি কে শামীমের অফিস থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) পায় র্যাব। এ ছাড়া সেখান থেকে মার্কিন ডলার, মদ ও অস্ত্র উদ্ধার করে র্যাব।
জি কে শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীকে আজ বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর গুলশান থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। এরপর তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, অস্ত্র ও মাদক আইনে তিনটি মামলা করে। এরপর অস্ত্র ও মাদক মামলায় সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে গুলশান থানা পুলিশ।