ভোটে নির্বাচিত ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব যা বললেন
দীর্ঘ ২৭ বছর পর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই হবে নতুন নেতৃত্বের মূল চ্যালেঞ্জ।
রাতভর কাউন্সিলরদের টানা ভোট গ্রহণ শেষে ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। সংগঠনের নতুন সভাপতি হন ফজলুর রহমান খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জয়লাভ করেন ইকবাল হোসেন শ্যামল। পরে গণমাধ্যমে নিজেদের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া জানান দুই নেতা।
এ সময় ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, ‘ছাত্রদলের প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করা। আর তাঁর মুক্তির মধ্য দিয়েই আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব। গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।’
সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ‘আপনারা জানেন, ডাকসু নির্বাচনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাঁদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আমরা ছাত্রদের অধিকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের কার্যাবলি সুনিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাব।’
এর আগে বুধবার রাত ৮টা ৪৭ মিনিটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত চলে। রাত সোয়া ১টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। সারা দেশে ছাত্রদলের ১১৭টি ইউনিটের ৪৯০ জন কাউন্সিলর ভোট দিয়ে ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচন করেন।
১৯৯২ সালের পর এটিই ছাত্রদলের নেতৃত্ব, যাঁরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হলেন। ১৯৯২ সালে ভোটে রুহুল কবির রিজভী সভাপতি ও এম ইলিয়াস আলী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোট প্রার্থী ছিলেন ২৮ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে নয়জন এবং সাধারণ সম্পাদক ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মেয়াদ শেষ হওয়ায় ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু একদিন আগে ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার চতুর্থ জজ আদালত সাবেক কমিটির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহর দায়ের করা মামলায় কাউন্সিলের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১০ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে ছাত্রদলের কাউন্সিল।
এর মধ্যেই গতকাল বুধবার সারা দেশের কাউন্সিলরদের ঢাকায় তলব করা হয়। বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান রুদ্ধদ্বার বৈঠকে করেন।
এর পর তারেক রহমান প্রার্থী ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে স্কাইপের মাধ্যমে কথা বলেন। পরে সিদ্ধান্ত হয়, ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত আসে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসায় কাউন্সিল অধিবেশন হবে।