যাত্রীদের আস্থা অর্জন করুন : বিমানকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী
সততা ও আন্তরিকতার সাথে মানসম্পন্ন সেবা দেওয়ার মাধ্যমে যাত্রীদের আস্থা অর্জন করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ মঙ্গলবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জন্য কেনা চতুর্থ অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘রাজহংস’ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি ওই তথ্য জানায়।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের একটি অনুরোধ করব, আমরা কষ্টার্জিত অর্থে এসব উড়োজাহাজ ক্রয় করেছি...আপনাদের অবশ্যই আন্তরিকতার সাথে এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করতে এবং যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে হবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাটি আরও অধিক যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে সেতুবন্ধন হয়ে উঠতে পারবে।
বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিতে গতি আনতে দুটি কার্গো উড়োজাহাজ কেনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘পণ্য পরিবহনে আমরা দুটি কার্গো বিমান ক্রয় করব... আমরা কার্গো ভিলেজ স্থাপন করব যাতে আরও সহজে রপ্তানি করতে পারব... আমরা এ পদক্ষেপ নেব।’
বিমানের জন্য আরও তিনটি ড্যাশ উড়োজাহাজ কেনার ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, তিনি শুনেছেন যে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং অতি শিগগিরই দুটি উড়োজাহাজ বিক্রি করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কেউ একজন অর্ডার দেয়ার পর এখন আর এগুলো নিচ্ছে না। আমরা এ সুযোগটি কাজে লাগাব।’
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিমানের বহরে চতুর্থ বোইং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার যুক্ত হয়েছে। এটি জাতীয় পতাকাবাহী ‘বিমানের’ বহরে যুক্ত হওয়া ১৬তম বিমান।
বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের বিমান কারখানা থেকে ওই দিনই বিকেলে সরাসরি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে।
বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল ও অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা জলকামান স্যাল্যুট জানিয়ে বিমানবন্দরে ড্রিমলাইনারটি গ্রহণ করেন।
এর আগে, গত বছরের আগস্ট ও ডিসেম্বর মাসে প্রথম ও দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশ বীনা’ ও ‘হংসবলাকা’ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। গত জুলাই মাসে তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘গাঙচিল’ ঢাকায় অবতরণ করে।
বিমানে একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড্রিমলাইনারগুলোর নাম রাখেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি করে।
চুক্তি অনুযায়ী বোয়িং এরইমধ্যে চারটি ৭৭৭-৩০০ইআর ও দু’টি ৭৩৭-৮০০ এবং চারটি ড্রিমলাইনার বিমানকে হস্তান্তর করেছে।
২৭১ আসনের ‘রাজহংস’ বোয়িং ৭৮৭-৮ কে অন্যান্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ জ্বালানী সাশ্রয়ী বিমান হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। বিমানটি ঘন্টায় ৬৫০ মাইল বেগে একটানা ১৬ ঘন্টা উড়তে সক্ষম।
বিমানটি ৪৩ হাজার ফুট উচ্চতায় ওয়াইফাই পরিষেবা দেবে। এর ফলে যাত্রীরা আকাশ থেকে ইন্টারনেটের সাহায্যে বিশ্বের যে কোন স্থানে তাদের বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।