ইয়াবা জব্দ করে ভাগবাটোয়ারা, পাঁচ পুলিশ রিমান্ডে
অভিযান চালিয়ে ইয়াবা জব্দ করার পরে আসামি ছেড়ে দিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারার অভিযোগে গুলশান থানার এক সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) পাঁচ পুলিশ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম কনক বড়ুয়া এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক পরিতোষ চন্দ্র আজ আসামিদের হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) জালাল এনটিভি অনলাইকে বলেন, রিমান্ডকৃত আসামিরা হলেন গুলশান থানার এএসআই মাসুদ আহমেদ মিয়াজী, এপিবিএনের পুলিশ কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল ও নায়েক মো. জাহাঙ্গীর আলম। তাদের তিন দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।
জিআরও জালাল বলেন, এ ছাড়া এপিবিএনের কনস্টেবল মো. রনি মোল্ল্যা ও কনস্টেবল মো. শরিফুল ইসলামকে দুই দিন করে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
রিমান্ড প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে উত্তরার এপিবিএন-১ সদর দপ্তরের ব্যারাক ভবনের চতুর্থ তলার বাথরুমের সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইয়াবার ভাগবাটোয়ারা করছেন। তখনই তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় এপিবিএন। ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি নিয়ে একটি ফোর্স যায় সেই বাথরুমে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন এপিবিএন-১ এর উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবু জাফর।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, অভিযানের সময়ে এসআই জাফর বাথরুমের সামনে গিয়ে কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল, রনি মোল্ল্যা ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলামকে দেখতে পান। এরপর তাদের নাম-পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশ সদস্য বললেও কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডলকে তল্লাশি করা হয়। তল্লাশির সময় প্রশান্তের ফুল প্যান্টের ডান পকেট থেকে ১৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এর পরে অভিযান চালানো হয় প্রশান্ত মণ্ডলের ব্যারাকের রুমে। সেখানে তার কাপড়ের ট্রাংক থেকে আরো ৩৯৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশান্তকে নিবিরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি শরিফুলের কাছে টাকা আছে বলে জানান। শরিফুলের কাছ থেকে ইয়াবা বিক্রির ১৫ হাজার টাকাসহ আটক করা হয়। এবার শরীফুলকে জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, তিনি রনি মোল্ল্যার কাছ থেকে ১৮ হাজার ৫০০ টাকায় ১৫০ পিস ইয়াবা কিনেছেন। এরপর রনিকে গ্রেপ্তার হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সবার শেষে প্রশান্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় গুলশানের গুদারাঘাট চেকপোস্টে একটি মোটরসাইকেল তল্লাশি করে আরোহীর কাছ থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে যোগসাজশ করে তাকে ছেড়ে দিয়ে তার কাছে থাকা ২০০ পিস ইয়াবা গুলশানের এএসআই মাসুদ মিয়াজী তার হেফাজতে রাখেন। বাকি ১৫০ পিস নেন জাহাঙ্গীর আলম।
পরে সবাইকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পূর্ব থানায় নেওয়া হয়। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ।
জিআরও জালাল জানান, আসামিদের উত্তরা পূর্ব থানায় রিমান্ডের জন্য নিয়ে গেছে পুলিশ।