কথায় কথায় মারধর, গরম পানির ছ্যাঁকা, পালিয়ে হাসপাতালে গৃহকর্মী
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনে সাদিয়া বেগম (১৮) নামে এক গৃহকর্মী গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। তার বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার সিংগেরকান্দা গ্রামে।
গৃহকর্মী সাদিয়ার অভিযোগ, গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপি তুচ্ছ ঘটনায় তাকে লাঠিপেটা করতেন এবং হাতে গরম পানি ঢেলে ছ্যাঁকা দিতেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সে ওই বাসা থেকে কৌশলে পালিয়ে খালার বাসায় চলে যায়, পরে সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আসে।
সাদিয়ার স্বজনরা জানান, সাত বছর আগে দূরসম্পর্কের এক খালার মাধ্যমে সাদিয়া ভৈরব বাজারের মেহেরুন্নেছা অপির বাসায় কাজ শুরু করে। কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই তুচ্ছ ঘটনায় যখন-তখন তাকে মারধর করা হতো। অনেক সময় হাত-পা বেঁধেও নির্যাতন করা হতো। তাকে বাসার বাইরে বা গ্রামের বাড়িতে যেতে দেওয়া হতো না। এমনকি গৃহকর্ত্রী বাসার বাইরে গেলে তাকে তালাবদ্ধ করে ঘরে রেখে যেতেন।
গত সোমবার সন্ধ্যায় কাজ করার সময় কাঁচের চুড়ির আলনা পড়ে গিয়ে একটি চুরি ভেঙে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গৃহকর্ত্রী তাকে লাঠি দিয়ে পেটানোসহ গরম পানি ঢেলে হাতে ছ্যাঁকা দেয়। মঙ্গলবার রাতে গোপনে সে বাসা থেকে পালিয়ে খালার কাছে চলে যায়। পরে সেখান থেকে হাসপাতালে যায়।
খবর পেয়ে রাতেই গণমাধ্যমকর্মীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে গেলে নির্যাতিত সাদিয়া তার উপর চলা নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। তবে এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এবং এ ব্যাপারে তার পরিবারের কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. ফেরদৌস বলেন, সাদিয়ার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতগুলি গুরুতর বলে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে সাদিয়ার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।