পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে শোকের প্রতীক হিসেবে তাজিয়া মিছিল বের করে।
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মূল তাজিয়া মিছিলটি সকাল ১০টার দিকে পুরান ঢাকার হোসেনি দালান ইমামবাড়ার থেকে শুরু হয়। কালো পোশাক পরিহিত পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশুরাও মিছিলে যোগ দেয়।
শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য মোহাম্মদ মাকসুদ হোসেন জানান, মিছিলটি আজিমপুর, বকশি বাজার, নিউমার্কেট এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুর ২টার দিকে ধানমণ্ডির জিগাতলা গিয়ে শেষ হয়। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের সব নির্দেশনা মেনে আমরা আমাদের মিছিল বের করেছি। তাজিয়া মিছিলে আমরা ছুরি, তলোয়ার, অন্যান্য ধারালো অস্ত্র বা দাহ্য বস্তু বহন করছি না।’
আগের বছরগুলোর মতো এবারও পবিত্র আশুরার অনুষ্ঠানস্থলে কাউকে ব্যাগ, তীক্ষ্ণ অস্ত্র বা দাহ্য কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। নির্বিঘ্নে আশুরা উদযাপন উপলক্ষে হোসেনি দালান এবং আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানায় পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আর্চওয়েতে প্রবেশ এবং তল্লাশি ছাড়া কাউকে মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গত শনিবার জানিয়েছেন, তাজিয়া মিছিলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মিছিলে সকল প্রকার ধারালো বা তীক্ষ্ণ অস্ত্র, দাহ্য বস্তু, ব্যাগ, লাঠি, ছুরি, তলোয়ারের ব্যবহার নিষিদ্ধ। শোক মিছিলে কোনো মোটরসাইকেল অংশ নিতে পারবে না এবং কোনো পতাকার উচ্চতা ১২ ফুটের বেশি হতে পারবে না। এ ছাড়া মাঝপথ থেকে কেউ মিছিলে যোগ দিতে পারবে না।
সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। ইসলাম ধর্মমতে, মহান আল্লাহ এই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে।
ইসলামের ইতিহাসে বিষাদময় কারবালাসহ নানা ঘটনার স্মরণে হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা পালিত হয়।
বাংলাদেশে এটি সরকারি ছুটির দিন।
৬৮০ খ্রিস্টাব্দে এই দিনে ফোরাত নদের তীরে ঐতিহাসিক কারবালা প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.) সপরিবারে নির্মমভাবে শহীদ হন। শিয়া মতাবলম্বীদের কাছে আশুরা বিষাদের দিন।