নদীর তীরের জমি কোনো ব্যক্তির নয় : ড. মুজিবুর রহমান
জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেছেন, ‘অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে তা দ্রুত উচ্ছেদ করতে হবে। নদী তীরের জমি কোনো ব্যক্তির নয়, এটি রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কেউ কেউ নদীর জমির মালিক হয়েছেন। এর সঙ্গে যাঁরা জড়িত আছেন বা ছিলেন তাঁদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
আজ সোমবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ধলেশ্বরী নদীর খননকাজ নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘নদী রক্ষায় নেওয়া প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন না হলে কেউ রেহায় পাবে না। এর জন্য জেলেও যেতে হতে পারে। তাই সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া নদী রক্ষায় কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না। জেলার সব নদীর সীমানা সিএস রেকর্ড অনুযায়ী দিয়ারা জরিপ করে নির্ধারণ করা হবে।’
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় নদীরক্ষা কমিটির সদস্য মো. আলাউদ্দিন, প্রকল্প পরিচালক (৪৮ নদী খনন প্রকল্প), প্রকল্প পরিচালক ইকরামুল হক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী সাজিদুর রহমান, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটির সভাপতি আজাহারুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ধলেশ্বরী নদীরক্ষা আন্দোলন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় নদী কমিশনের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদার আরো বলেন, ‘পরিকল্পনা ছাড়া কাজ করলেন কিন্তু কোনো ফলপ্রসূ হলো না। তাহলে সরকারের টাকা সব গচ্চা গেল। তাই টেকসই উন্নয়নের জন্য সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা ছেলেখেলা নয়, এটা নদীর খেলা। নদীর গতিবিধি বুঝেই পরিকল্পনা করতে হবে।’
সঠিক সার্ভে ছাড়া নদী রক্ষায় আর কোনো প্রকল্প না নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
সভায় মানিকগঞ্জে নদী রক্ষা, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, নদী প্রবহমান করা ও ধলেশ্বরী নদী খনন নিয়ে সভায় বক্তব্য দেন বক্তারা। নদী খননের মাটি যাতে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার না হয় সেই দিকটি নজর রাখার কথা বলা হয়।
‘ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও’ কমিটির দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মানিকগঞ্জের কয়েকটি নদী পরিদর্শন করেন।
সম্প্রতি ধলেশ্বরী নদীর সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি এলাকা থেকে সিংগাইর উপজেলার ইসলাম নগর পর্যন্ত সাড়ে ৪৫ কিলোমিটার খনন করার জন্য ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নদীর হাইড্রোগ্রাফ সার্ভে না করে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ না করায় খননকাজ শুরু করতে দেওয়া হয়নি।
সভায় আগামী এক মাসের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া শেষ করে নভেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়।