পাকুয়াখালী হত্যার ২৩ বছর : ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার বিচার দাবি
রাঙামাটির লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীতে ৩৫ বাঙালি কাঠুরিয়াকে হত্যার বিচার ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে পাহাড়ে বসবাসকারি বাঙালিদের একাংশের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন।
আজ সোমবার পাকুয়াখালী গণহত্যার ২৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাঙামাটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সম-অধিকার আন্দোলনের নেতারা এই দাবি জানান।
রাঙামাটি শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
এতে উপস্থিত ছিলেন সম-অধিকার আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. শাহজাহান, সহসভাপতি মো. শাহ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবু বক্কর ছিদ্দিক, অর্থ সম্পাদক মতিউর রহমান বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক মো. শাহজাহানসহ অন্য নেতারা।
বক্তারা ২৩ বছর পরও পাকুয়াখালী গণহত্যার বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, পাহাড়ে যত দিন অবৈধ অস্ত্র থাকবে, তত দিন এখানে পাহাড়ি-বাঙালি কেউ নিরাপদ নয়। পাহাড় থেকে দ্রুত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কামাল এ সময় বলেন, ‘তৎকালীন শান্তিবাহিনী মিটিংয়ের জন্য মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ৩৫ জন বাঙালি কাঠুরিয়াকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাঁদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এই নৃশংস গণহত্যার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু আজো সেই তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ তো দেখেইনি, এমনকি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পুনর্বাসন করার কথা থাকলেও কোনো সরকারই তাঁদের খবর পর্যন্ত রাখেনি।’
জাহাঙ্গীর কামাল আরো বলেন, ‘১৯৯৭ সালে শান্তিবাহিনী সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে অস্ত্র জমা দিলেও তাঁরা তাঁদের আগের অবস্থানে থেকে সরে আসেনি। উল্টো সংগঠনটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এখনো অস্ত্রের মজুদ বাড়িয়ে পাহাড়কে অশান্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত।’
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের এক বছর আগে ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার ঠিক তিন মাসের মাথায়, লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালি এলাকায় তৎকালীন সশস্ত্র গেরিলা সংগঠন শান্তিবাহিনী ৩৫ জন বাঙালি কাঠুরিয়াকে ডেকে নিয়ে যায়। তাঁরা সবাইকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনাটি চুক্তিস্বাক্ষরের পুরো প্রক্রিয়াটিকেই আরো জোরালো করে। সেই সময় ঘটনাটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল।