ছাত্রদলের সম্মেলন : পার্থক্য গড়বে আঞ্চলিক ভোট
দিন ঘনিয়ে আসছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জাতীয় সম্মেলনের। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর দীর্ঘ ২৭ বছর পর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে এ সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচিত হতে যাচ্ছে। তবে এবারের কাউন্সিল করতে মূল দল বিএনপিকে কম প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি। প্রথম দফায় গত ২৫ জুলাই সম্মেলনের তারিখ ঘোষিত হলে সদ্য সাবেক ছাত্রদল নেতাদের বিক্ষোভোর মুখে পড়ে দলটি।
বিক্ষোভ সামলে অবশেষে চলতি মাসের ১৪ তারিখ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। তবে এবারের সম্মেলন ছাত্রদলের আগের পাঁচটি সম্মেলনের মতো নয়। এবার নেতা নির্বাচনে আঞ্চলিক ভোট মূল ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে সবকিছুর শেষে এই নির্বাচনকে বিতর্কমুক্ত রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া দলের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়াররম্যান তারেক রহমান নিজেই ছাত্রদলের এই কাউন্সিল তদারকি করছেন। এরই মধ্যে ছাত্রদলের সম্মেলনের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে দলটি।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ছাত্রদলের প্রতিটি শাখার শীর্ষ পাঁচজন নেতা ভোট দিতে পারবেন। সংগঠনটির ১০টি সাংগঠনিক বিভাগের ১১৬ শাখায় মোট ৫৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের ৯ শাখায় ৪৫ ভোট, ঢাকা বিভাগের ২৯ শাখায় ১৩৮ ভোট, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ শাখায় ৫৮ ভোট, কুমিল্লা বিভাগের ৬ শাখায় ৩০ ভোট, খুলনা বিভাগের ১৪ শাখায় ৭০ ভোট, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯ শাখায় ৪৫ ভোট, রাজশাহী বিভাগের ১১ শাখায় ৫২ ভোট, সিলেট বিভাগের ৭ শাখায় ৩৫ ভোট, রংপুর বিভাগের ১৩ শাখায় ৬৩ ভোট ও ফরিদপুর বিভাগের ৬ শাখায় ৩০ ভোট রয়েছে।
ছাত্রদলের সম্মেলন নিয়ে বেশ কয়েকটি জেলার কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এনটিভি অনলাইনকে তাঁরা বলেন, ‘আমরা ভোটার, তাই নিজের ভোট কাকে দেব সেটি আমাদের বিষয়। তবে নিজ অঞ্চলে যোগ্য প্রার্থী থাকলে সেটাও আমাদের বিবেচনায় থাকবে।’
ছাত্রদলের এবারের সম্মেলনের প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতি বিষয়ে বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য এ বি এম মোশাররফ হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ছাত্রদলের সম্মেলন হবে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য। এরই মধ্যে নির্বাচনের প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। সম্মেলনে সারা দেশ থেকে আসা ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারে সেজন্য থাকবে ভোট বাক্স, বুথ, ব্যালট, ভোটের সিল। যার ধরন হবে জাতীয় নির্বাচনের মতো।’
সম্মেলনের স্থানের ব্যাপারে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা এখনো কোনো স্থান ঠিক করিনি। তবে তিনটি জায়গা বিবেচনায় রেখেছি। এর মধ্যে যেকোনো একটি ঠিক করা হবে। সেগুলো হলো- রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন, নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় বা চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়।
ছাত্রদলের এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থী নয়জন। এর মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক বৃত্তি ও ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মামুন বিল্লা (মামুন খান), কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহগণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ফজলুর রহমান খোকন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহসভাপতি সাজিদ হাসান বাবু। এর মধ্যে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের বাড়ি যশোর, হাফিজুর রহমানের বাড়ি বাগেরহাট, মামুন খান পটুয়াখালীর, ফজলুর রহমান খোকন বগুড়ার আর সাজিদ হাসান বাবু জামালপুরের।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ১৯ জন। এর মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় শীর্ষে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ, সহসভাপতি আমিনুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, তানজিল হাসান, ইকবাল হোসেন শ্যামল ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তাহের।