‘সাইফুর রহমান থাকলে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হতো না’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সাইফুর রহমানরা থাকলে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতো না। তাঁরা দেশপ্রেমিক ছিলেন। তাঁরা দেশকে ভালবাসতেন। নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য তারা দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেননি, দেশ বিক্রি করে দেননি।’
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য এম সাইফুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ওই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাইফুর রহমান সাহেবরা থাকলে ব্যাঙের ছাতার মতো ব্যাংক গড়ে উঠতো না। দেশে লুটেরা অর্থনীতি চালু হতো না। সাইফুর রহমান থাকলে দেশের টাকা জমা দিয়ে ৩৭ লক্ষ টাকা দিয়ে পর্দা কেনা হতো না। পর্দার কাছে বালিশ তো হেরে গেছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে যখন দুর্ভিক্ষ লেগে গিয়েছিল, যখন খাদ্য উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল,মানুষের অভাব এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে পরনের কাপড়ে ঠিকমতো পেত না। এখনো মনে আছে এই দুর্ভিক্ষের সময় কুড়িগ্রামে বাসন্তী তার লজ্জাস্থান ঢাকার জন্য একটি কাপড় পাননি। সেই অর্থনীতিকে পাল্টে দিয়ে আজকে যে সম্ভাবনাময় অর্থনীতি বাংলাদেশে তৈরি করেছে এর ভিত্তি স্থাপন করেছে এই সাইফুর রহমান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে। এটা হল বাস্তবতা। এটা তারা অবলীলা অস্বীকার করছে। আমার মনে আছে ওই সময় মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের নাম দিয়েছিলেন নীতির বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে পাল্টে দেওয়া, বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে পাল্টা দেওয়া, অর্থনীতিকে পাল্টে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন আমাদের সাইফুর রহমান। তিনি অত্যন্ত মেধাবী পেশাজীবী ছিলেন। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিণত হয়েছিলেন। মানুষের প্রয়োজন ও যুগের প্রয়োজনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমষ্টিগত শৃঙ্খলার মধ্যে উনি নিয়ে এসেছিলেন। একটা ডিসিপ্লিন ইকোনমি তৈরী হয়েছিল। এখানে চুরি-চামারি ইচ্ছা করলেই করা যেত না। এখানে ইচ্ছা করলেই কেউ পুকুর চুরি করার সুযোগ পেত না। ১০ হাজার কোটি টাকার প্রোজেক্ট ৩০ হাজার কোটি টাকা করার কোনো সুযোগ ছিল না।’
অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এম সাইফুর রহমানের মত স্ট্যাটাসের একজন নেতা আন্দোলন সংগ্রামের সময় বাসায় থেকে নির্দেশনা দেবেন আর অন্যরা রাস্তায় আন্দোলন করবে, পুলিশ ফেস করবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। তাঁর মত রাজনীতিকের কাছ থেকে আমরা এমনটাই আশা করেছিলাম। কিন্তু এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় এমন কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই যেখানে তিনি সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। ওনার স্ট্যাটাস থেকে উনি সাধারণ একজন কর্মী হিসেবে সব সময় রাজপথে ছিলেন এটা একটি বিরল ঘটনা।’