অর্থ নিয়ে স্কুলে চাকরি : জমি দিয়েও হতাশ জমিদাতা
১৪ বছর আগে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্ব হাজারীগঞ্জ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার সময় পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়ার শর্তে এক একর জমি দিয়েছিলেন হাজি আবদুল আজিজ মাস্টার। কিন্তু আজ পর্যন্ত জমিদাতা পরিবারের কাউকে চাকরি দেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ উঠেছে, তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে অন্যদের শিক্ষক ও অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে চরফ্যাশনের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেছেন হাজি আবদুল আজিজ মাস্টার। গত ২০ আগস্ট আদালত সমন জারি করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ১৫ দিনের মধ্যে হাজির হওয়ার আদেশ দেন।
বিদ্যালয়ের জমিদাতার পরিবার ও গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্ব হাজারীগঞ্জ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একজন সহকারী শিক্ষক ও একজন অফিস সহকারীর পদ শূন্য ছিল। ওই পদে সব ধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও জমিদাতার পরিবারের কাউকে নিয়োগ দেননি প্রধান শিক্ষক। তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে অন্য দুজনকে চাকরি দেন।
জমিদাতা হাজি আবদুল আজিজ মাস্টার জানান, ২০০৫ সালে হাজারীগঞ্জ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন আবদুল খালেক মাস্টার। তিনি আমার কাছ থেকে এক একর জমি স্কুলের নামে লিখে নেন। জমি নেওয়ার সময় আমার দুই ছেলেকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু জমি নেওয়ার পর খালেক মাস্টার আমার দুই ছেলেকে চাকরি দেননি। টাকা নিয়ে তিনি অন্য লোক নিয়োগ দিয়েছেন। আমি তাঁকে আমার ছেলেদের চাকরির কথা বললে জানান, কোটা খালি নেই। তাই শর্ত সাপেক্ষে জমি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের চাকরি না দেওয়ায় ২০১৩ সালে আমি আদালতে একটি প্রতারণার মামলা করি। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাজারীগঞ্জ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক মাস্টার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, স্কুলটির জমিদাতা হাজি আবদুল আজিজ মাস্টার ঠিকই আছেন। তবে তাদের কাউকে চাকরি দেওয়ার কথা ছিল না আমার সঙ্গে। আমি সব চাকরি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের (আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব) সুপারিশে দিয়েছি। তিনি আমাকে যাকে যাকে চাকরি দিতে বলেছেন, আমি তাঁকেই দিয়েছি। আমি কারো কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে এক টাকাও নেইনি, শুধু স্কুলের আসবাবপত্র কেনার কিছু টাকা নিছি।’
হাজারীগঞ্জ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাহাবউদ্দিন বলেন, ‘জমিদাতার কোটায় চাকরি দেওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব সাহেবের সুপারিশে একজনের চাকরি হয়ে গেছে। তাই এই মুহূর্তে কোনো পদ খালি নেই।’
অর্থ আদান-প্রধানের বিষয়ে জানতে চাইলে সাহাবউদ্দিন বলেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টি প্রধান শিক্ষক জানেন। আমার এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।’