ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন গ্রহণ, শুনানি ১৩ অক্টোবর
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদ গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৩ অক্টোবর এ আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসান উল্লাহ ও রানা কাওসার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সরওয়ার হোসেন বাপ্পী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহানা পারভীন। মূল মামলার বাদীপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সায়্যেদুল হক সুমন।
এ ব্যারিস্টার সায়্যেদুল হক সুমন এনটিভি অনলাইনকে জানান, ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত, তবে জামিন দেননি। এ বিষয়ে শুনানি ১৩ অক্টোবর।
গত ১৭ জুলাই (বুধবার) সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন এ মামলায় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এই মামলায় ২য় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১ সেপ্টেম্বর (রোববার) দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে হাইকোর্টে করা জামিন আবেদন ৯ জুলাই (মঙ্গলবার) বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।
চলতি বছরের ১৬ জুন (রোববার) রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ১৭ জুন (সোমবার) তাকে ফেনীর সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে করা হয়।
ওই দিনই ফেনী সোনগাজী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম মোয়াজ্জেমকে আদালতে হাজির করে। পরে জামিন আবেদন করলে আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে ‘অসম্মানজনক’ কথা বলায় ও তার জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল (সোমবার) সাইবার ট্রাইব্যুনালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়্যেদুল হক সুমন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ (বুধবার) সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী নুসরাতের মা। পরে সিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
যৌন হয়রানির অভিযোগ করতে যাওয়ার পর থানার ওসির কক্ষে ফের হয়রানির শিকার হতে হয় নুসরাতকে। ‘নিয়ম না মেনে’ জেরা করতে করতেই নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি। মৌখিক অভিযোগ নেওয়ার সময় দুজন পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।
গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) আলিম পরীক্ষার আগ মুহূর্তে বান্ধবীকে মারধরের কথা বলে নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি করলে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
ওই দিন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল (বুধবার) চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।