রাজপথে নেমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, খালেদা জিয়া কারামুক্ত হয়ে মানুষের সামনে এসে উপস্থিত হলে সরকার এক মিনিটও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, একটি অসত্য মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। কারণ, সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। তারা জানে, খালেদা জিয়া যদি এই মুহূর্তে কারাগার থেকে বের হয়ে মানুষের সামনে উপস্থিত হতে পারেন তাহলে সরকার এক মিনিটও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘অপরাজয় বাংলাদেশ’ আয়োজিত চামড়া শিল্প ধ্বংসকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিনেতা এসব কথা বলেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, এই রাজপথে থাকার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। রাজপথে আমরা বহুবার আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। এতিমের চামড়ার টাকা যারা লুট করতে পারে, অতীতের লুটপাটের অভিজ্ঞতা যে সরকারের আছে সেই সরকারের কাছে দাবি করে কোনো লাভ নেই। তাই আসুন, রাজপথে নেমে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, খালেদা জিয়াকে সরকারি সিদ্ধান্তে মুক্ত করা যাবে না। তাই খালেদা জিয়াকে যদি মুক্ত করতে হয় তাহলে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামতে হবে। তাঁকে মুক্ত করার জন্য কয়জন প্রাণ দিয়েছেন? কয়টি মামলা খেয়েছেন? আসুন, রাস্তায় লড়াই করেন। লড়াই করলে যারা এতিমের চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করে দিয়েছে সেই সিন্ডিকেট অটোমেটিক্যালি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এই সরকারের কাছে দাবি করে কোনো ফল পাওয়া যাবে- আমি এটা বিশ্বাস করি না।
চামড়া শিল্প ধ্বংসকারীদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে সাবেক এই বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘চতুর্থ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী চামড়া শিল্পকে আজকে কারা ধ্বংস করে দিল? দাম না পেয়ে হাজারও কোরবানির পশুর চামড়া মাটির নিচে পুঁতে ফেলা হলো। আজকে ছয়দিন হলো ঈদ চলে গেছে। সরকার যদি সত্যিকার অর্থে জনবান্ধব সরকার হতো তাহলে এই গরিবের হকের এতিমের চামড়া লুণ্ঠনকারীদের বিচার হতো। কেন এখনো এই গরিবের টাকা আত্মসাৎকারীদের খুঁজে বের করা হচ্ছে না। অবশ্য সেটা তো সরকার করবে না, কারণ এই সরকার নিশিরাতের সরকার।
‘বিএনপিকে মিডিয়া বাঁচিয়ে রেখেছে’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, কিছুদিন আগে উনি (ওবায়দুল কাদের) অসুস্থ ছিলেন। আমরা উনার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলাম, উনি যেন বেঁচে থাকেন। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম- তিনি অসুস্থ অবস্থা থেকে ফিরে এসে বিরোধী দলের গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। কিন্তু আমরা কী দেখলাম- তার কথাবার্তা সেই আগের মতোই আছে। তাঁর মতো একজন বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ যদি বিরোধী দলকে এমন আন্ডার এস্টিমেট করে কথা বলেন এটা কি শোভা পায়? এখন আমি যদি উনাকে প্রশ্ন করি, ‘আপনাদের তো রাজনীতিতে পুলিশ টিকিয়ে রেখেছে, আপনারা তো পুলিশের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতায় টিকে আছেন’- তখন উনি কী উত্তর দেবেন?
অনির্বাচিত সরকার দেশের স্বাস্থ্য খাত, পাটশিল্প, শেয়ারবাজার ধ্বংস করে এখন চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে মন্তব্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, এই সরকারের আমলে সম্মানিত বিচারকদের নিয়েও প্রশ্ন করা হচ্ছে? এই সরকারের আপনজনরা সিন্ডিকেট করে এই এতিম গরিবদের হকের টাকা চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করে দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি খলিলুর রহমান ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তামান্না, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।