খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির বিষয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলবে বিএনপি
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য ও মুক্তির বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। যেসব গণতান্ত্রিক দেশ আছে তাদেরকে অবহিত করব। অন্যায়ভাবে দেশনেত্রীকে আটক করে রাখা হয়েছে সে বিষয়টা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, ঈদের আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের যে বিষয়টা এসেছিলে হাইকোর্টে সেখানে একটা নেতিবাচক আদেশ হওয়ার পর থেকে আমাদের যে ধারণাটা আরো দৃঢ় হয়েছে যে, এখন বিচার ব্যবস্থা আর স্বাধীনভাবে, স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। সরকার বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। সেক্ষেত্রে আইনিভাবে এটা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে, এখানে আমরা ন্যায় বিচার এখানে পাবো কিনা। সে কারণে আমরা দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য আমাদের বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশের কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। যেহেতু আগস্ট মাসে সরকার কোনো কর্মসূচি নিতে দেয় না, সেকারণে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই কর্মসূচি আবার শুরু করব।’
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরো ভয়াবহ। সবাই বলছেন, আগামী মাসটা নাকি আরো খারাপ যাবে, অবস্থা আরো বাড়বে। দুর্ভাগ্যের বিষয়টা হচ্ছে এখন পর্যন্ত ওষুধ এসে পৌঁছেনি। আমরা গত সভা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম , এটার প্রতিরোধে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে; সেটা সরকার করেনি। আপৎকালীন একটা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলাম সেটাও নেওয়া হয়নি। তার ফলে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আমরা দাবি জানাচ্ছি সম্পূর্ণ বিনা খরচে চিকিৎসা দেয়ার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার।’
কোরবানির চামড়া নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের তৎপরতা এবং সরকারে ব্যর্থতারও সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘চামড়া শিল্প ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এসব কাজ করেছে। আমরা অবিলম্বে এই শিল্পকে রক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।’
এছাড়া স্থায়ী কমিটির আজকের বৈঠকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে জেলা-মহানগর-উপজেলা পর্যায়ে র্যালী, সভা-সমাবেশ-আলোচনাসভা অনুষ্ঠানে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ঢাকাতে কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা র্যালী ও পরদিন আলোচনাসভা করব। এরপরেই বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশগুলো সমাপ্ত করব।’
বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।