লাল শার্ট পরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ছাত্রলীগ নেতার শোক প্রকাশ
জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে লাল শার্ট পরে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে দেখা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
১৫ আগস্টের কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাধারণত শোকের রং কালো পোশাক পরে থাকেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতারাও সাদা কালো পোশাক পরিধান করেই শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও সাদা কালো পোশাক পরিধান করেছেন। তবে তাঁদের পাশে থেকে লাল রঙের হাফ হাতা শার্ট পরে শ্রদ্ধাঞ্জলিতে অংশ নেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ-মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সুলাইমান খান সুজন। যা শোকাবহ আগস্টের কর্মসূচিতে বেমানান বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতা। এটিকে ছাত্রলীগের আদর্শ বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রতারণা হিসেবে দেখছেন অনেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপপ্রচার সম্পাদক সাইফুদ্দিন বাবু এনটিভি অনলাইকে বলেন, ‘এটা অবশ্যই কাণ্ডজ্ঞানহীনতার পরিচয়। এটা হতেই পারে না। ছাত্রলীগের কোনো সক্রিয় কর্মী এমনটা কখনোই করতে পারেন না। আমরা বরাবরই বলে আসছি, ছাত্রলীগে এবারের কমিটিতে অনুপ্রবেশ অনেক বেশি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটা ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ব্যর্থতা। তাদের সফরসঙ্গীরা কেন এমন পোশাক পরিধান করবেন? এর দায়ভার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককেই নিতে হবে।’
এমন পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ছাত্রলীগের উপ-মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সুলাইমান খান সুজন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমি শুরু থেকেই হীনমন্যতায় ছিলাম। গতকাল রাব্বানী ভাই ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ যাওয়ার সময় মাদারীপুরের রাজৈর থেকে আমাকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর সমাধিস্থলে কেন্দ্রীয় নেতারা কম থাকায় আমি সেখানে গেছিলাম।’
তবে আগস্টের কর্মসূচিতে এমন পোশাক পরতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার কবির বিদ্যুৎ। বিদুৎ বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের সব মানুষ তো আর কালো পোশাক পরে নাই। এখানে সমস্যা কোথায়?’
সবার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতার এমন পোশাক বেমানান কি না জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বলেন, ‘আদর্শ পোশাকে নয়, আমরা অন্তরে ধারণ করি।’
এ বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।