রিজভীকে ‘চামড়া সিন্ডিকেটে’র নেতার নাম দিতে বললেন কাদের
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল মঙ্গলবার কারো নাম উল্লেখ না করেই অভিযোগ করেছিলেন, দেশের চামড়া বাজারে ধসের পেছেনে সিন্ডিকেট কাজ করেছে। সেই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এক বড় নেতা।
একদিনের ব্যবধানে আজ বুধবার রিজভীর কাছে সেই নেতার নাম জানতে চাইলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের কোন নেতার নেতৃত্বে চামড়া সিন্ডিকেট হয়েছে, তাঁর নাম রিজভী সাহেবকেই প্রমাণসহ দিতে হবে। প্রমাণসহ নাম পেলে আমরা অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’
আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঈদ-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
চামড়ার বাজার নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে চামড়াশিল্পের কোনো সমস্যা হয়ে থাকলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ চামড়াশিল্প রক্ষার জন্য যা করা দরকার, সরকার সবকিছুই করবে বলেও জানান তিনি।
চামড়ার দাম না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেও খুব বেশি ওয়াকিবহাল নই। অনেকেই অভিযোগ করছেন। এটি নিয়ে আমি চুলচেরা বিশ্লেষণ করে আপনাদের জানাব। তবে চামড়া নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট হয়ে থাকলে আমরা এর বিরুদ্ধেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিএনপির আপাতত কোনো কাজ নেই। এ কারণেই তারা এখন শুধু সরকারি দলের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়াচ্ছে।’
ঈদের আগে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সারা দেশে প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা। আর বকরির চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ১৩ থেকে ১৫ টাকা।
চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘কোরবানির চামড়া নিয়ে যাতে কোনো কারসাজি বা সিন্ডিকেট না হয়, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হবে।’
গত সোমবার সারা দেশে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজের পরপরই কোরবানির জন্য নির্ধারিত পশু কোরবানি করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। কোরবানির পর পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েন কোরবানিদাতারা। কোনো কোনো এলাকায় চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মাটিতে পুঁতে ফেলেন। কেউ কেউ রাস্তায় ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানান। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে শোরগোল চলছে।
ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া থেকে বছরে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে গরু থেকে পাওয়া যায় ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগল ও ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষ এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়া থেকে পাওয়া যায়। বছরে মোট প্রাপ্ত চামড়ার শতকরা ৬০ ভাগই আসে কোরবানিতে জবাই করা পশু থেকে।