শোলাকিয়ায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ঈদের নামাজ আদায়
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ঐতিহাসিক এই ঈদগাহ ময়দানে এটি ছিল ঈদুল আজহার ১৯২তম জামাত। এতে ইমামতি করেন মাওলানা হিফজুর রহমান।
নামাজ শেষে দেশের বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ও বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়। নামাজে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
আজ সকাল থেকেই জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এই ঈদগাহ ময়দানে জড়ো হতে থাকেন মুসল্লিরা। এ সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য আশপাশের সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
ঈদ জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। এর একটি ট্রেন আজ ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অন্য ট্রেনটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি নিয়ে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে তিন স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। দুই প্লাটুন বিজিবি, নয় শতাধিক পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যের সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়। পাশাপাশি সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। মাঠের যাবতীয় ঘটনা পর্যবেক্ষণ ও মুসল্লিদের ওপর নজরদারি করতে দুটি ড্রোন ক্যামেরাও ব্যবহার করা হয়।
নামাজ শুরুর আগে শটগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। জামাত শুরুর পাঁচ মিনিট আগে তিনটি, তিন মিনিট আগে দুটি ও এক মিনিট আগে একটি গুলি ছুড়ে নামাজ শুরুর সংকেত দেওয়া হয়।
কথিত রয়েছে, কোনো এক ঈদের জামাতে শোলাকিয়ায় সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এই মাঠের নাম রাখা হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, যা এখন ‘শোলাকিয়া’ নামেই পরিচিত।