শেষ মুহূর্তে আতর-টুপির দোকানে ভিড়
আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়ার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে আতর, টুপি ও জায়নামাজ কিনছেন ক্রেতারা।
রোববার বাইতুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতারা আতর, টুপি ও জায়নামাজ কেনার জন্য বিক্রেতার সঙ্গে দরদাম করছেন। কেউ কেউ পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্যও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলেও কোনো কোনো ব্যবসায়ীর অভিযোগ, এবার ব্যবসা ভালো হয়নি।
রবিউল ইসলাম নামের এক আতর দোকানি বলেন, ঈদের আগে আজই শেষ ব্যবসা। সন্ধ্যার পরেই গ্রামের বাড়ি খুলনা চলে যাব। তবে এবার ব্যবসা কম হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
রবিউল বলেন, রোজার ঈদে মানুষ আতর বেশি কিনে। এবার বেশি একটা কিনে নাই। ঈদের আগে প্রতিদিন ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। দোকানে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আতর রয়েছে।
আলাউদ্দিন নামের একজন টুপি বিক্রেতা জানান, তাঁর ব্যবসা ভালো হয়েছে। তবে ব্যবসা রোজার ঈদে বেশি হয়। এ ঈদে মানুষ পশু কোরবানি দেওয়ার সরঞ্জামাদি বেশি কিনে। দোকানে ১০ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত দামের টুপি রয়েছে। তবে বেশির ভাগ মানুষ ৫০ টাকা দামের টুপি নিয়ে যায়। টুপিগুলো দেশি ও চীনে তৈরি বলে জানান তিনি।
হাসান নামের এক জায়নামাজ বিক্রেতা বলেন, ‘ভাই দোকান উঠায়া দেওয়ার পর থেকে এবার ব্যবসা নাই। ঈদ কেমনে করমু বুঝতেছি না। যেখানে আগে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকার বিক্রি হতো, আর এখন চার হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, বাইতুল মোকাররমের সামনে রাস্তা ঠিক করার কারণে সব দোকান ভেঙে দেওয়ায় ব্যবসা নষ্ট হয়ে গেছে।
অন্যদিকে, মনির নামের এক ক্রেতা জানান, জিগাতলা থেকে এখানে টুপি ও আতর কিনতে এসেছি। এখানের টুপি আতর একটু ভালো মানের। ঈদের দিন নামাজের সময় টুপি ও আতর ব্যবহার করব। পাশাপাশি ছোট ভাই ও বাবার জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
আরিফুজ্জামান টিপু নামের আরেক ক্রেতা জানান, সাদা পাঞ্জাবি ও জায়নামাজ কেনার জন্য মূলত এখানে এসেছি। এখানে তুরস্ক ও চীনের পণ্য পাওয়া যায়। তাই সব সময় এখান থেকে কিনে থাকি।
টুপি
দেশি টুপির পাশাপাশি বাহারি নকশা আর আকৃতির বিদেশি টুপিও পাওয়া যাচ্ছে বাইতুল মোকাররমের বিভিন্ন দোকানে। দোকানে চীনা টুপি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, পাকিস্তানি টুপি ১৫০ থেকে ৬০০, ভারতীয় টুপি ২০ থেকে ৬০০ এবং দেশে তৈরি টুপি ১০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি টুপির মধ্যে আসিফ জারদারি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়, চীনের ওয়ানি ৫৫০ টাকায়, ভারতের গুজরাটি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, সিডনি ৪০০, পাঠান ৪৫০ এবং ছোট পুতির সঙ্গে সোনালি কাজ করা প্রতিটি টুপি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়া নেটের তৈরি চীনা টুপি ১৫০ টাকা ও তুর্কি ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা।
আতর
সুলতান আতর এক হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা, আলফারেজ দুই হাজার টাকা, লর্ড আতর এক হাজার ২০০ টাকা, সিলভার এক হাজার ৮০০ টাকা, ওপেন এক হাজার ৫০০ টাকা, ইগুবস এক হাজার ৬০০ টাকা, বস এক হাজার ৫০০ টাকা এবং ম্যাডার রোজ ব্র্যান্ডের আতর এক হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জায়নামাজ
পাকিস্তানে কোকার জায়নামাজ ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, ন্যাশনাল ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, তুরস্কের আইরিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ও কাটারে নেওয়াজ ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া দেশে তৈরি গ্যাবার্ডিন কাপড়ের জায়নামাজগুলো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
কাঠ-পাথরের তসবি
আকিক পাথরের তৈরি তসবি ৪০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, জমরুদ ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, সোলেমানি পাথরের তসবি ৩০ থেকে ১৫০ টাকা, ক্রিস্টাল পাথরের তসবি ৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।