৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার হাতে পরিচয়পত্র
মিয়ানমার থেকে আসা পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই-কমিশনার (ইউএনএইচসিআর) কর্তৃক যৌথভাবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
তাঁদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে এটাই তাঁদের জীবনের প্রথম কোন পরিচয়পত্র প্রাপ্তি। ওই পরিচয়পত্র বায়োমেট্রিক তথ্য সম্বলিত এবং এটি নকল/জাল করা সম্ভব নয়।
১২ বছরের অধিক বয়সী যাচাইকৃত সকল শরণার্থীকে ওই পরিচয়পত্র প্রদান করা হচ্ছে। জানা যায়, নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থী সম্পর্কিত তথ্যের যথাযথ তা নিশ্চিত করে যা জাতীয় কর্তৃপক্ষ এবং মানবিক সংস্থা সমূহকে শরণার্থী জনগোষ্ঠী এবং তাঁদের প্রয়োজনসমূহ সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান করবে।
নিবন্ধনের সময় সংগৃহীত বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করে ইউএনএইচসিআর গত সপ্তাহে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে প্রথমবারের মতো গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন টুল উদ্বোধন করেছে। আঙ্গুলের ছাপ অথবা চোখের মণির স্ক্যান যাচাই করার মাধ্যমে এই পদ্ধতি সাহায্য বিতরণ ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করে। এটি নকল ও জাল প্রতিরোধী এবং সাহায্য প্রদানের ক্ষেত্রে যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেটা নিশ্চিতের জন্য সংস্থাগুলো ব্যবহার করতে পারে। সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে কেউ যাতে বাদ না পড়ে সেটির নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ওই পদ্ধতির মাধ্যমে।
ইউএনএইচসিআর-বাংলাদেশের প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস বলেন, ‘এটি আমাদের নিবন্ধন কর্মকান্ডের একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এই কার্ডটি থাকায় নিবন্ধিত শরণার্থীরা আরও নিরাপদ বোধ করবেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানকালে তাঁদের প্রয়োজনীয় সেবাসমূহ গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও, এই কার্ডে স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে যে তাঁদের মূল দেশ মিয়ানমার। তাঁরা যখন নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইবে তখন এই কার্ডটি তাঁদের নিজের দেশে ফেরার অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ আবাসনে ৯ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করেন যাঁদের মধ্যে ৭ লাখ ৪০ হাজার মানুষ ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের পর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন বলে ধারণা করা হয়।
এই নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি ২০১৮ সালের জুন মাসে শুরু হয়। বর্তমানে সাতটি কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গাকে নিবন্ধন করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের শেষ তিন মাসের আশ্রয় নেওয়া সব রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ৫৫০ জনেরও বেশি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।