গত বছর বিক্রি হয়নি, আবারও হাটে ‘পাগলু’ ও ‘কালো মানিক’
‘পাগলু’ ও ‘কালো মানিক’ গত বছরও গাবতলী পশুর হাটে ছিল। তবে চাহিদামতো দাম না পাওয়ায় বিক্রি হয়নি গরু দুটি। এবারও একই বাজারে এসেছে এ দুটি গরু। দুটি গরুর দাম হাঁকা হয়েছে যথাক্রমে ২০ লাখ ও ১৬ লাখ টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়নি পাগলু ও কালো মানিক। এক বছর লালন-পালন করার পর এখনো ক্রেতা না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছেন গরু দুটির মালিক মেহের আলী।
আজ শুক্রবার হাটে গিয়ে দেখা যায়, গাবতলী পশুর হাটে সবচেয়ে বেশি গরু উঠেছে। তবে ক্রেতার তুলনায় দেখার লোকই বেশি। হাটের মাঝখানে রাখা হয়েছে বড় বড় গরু। এর মধ্যে সাভারের আমিনবাজার থেকে আসা ‘পাগলু’ ও ‘কালো মানিক’ বড় গরুর মধ্যে অন্যতম। এ দুটি গরু দেখতে গাবতলীর হাটে ভিড় জমাচ্ছে শত শত মানুষ। দেখতে আসা সাধারণ মানুষ গরু দেখে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।
এ বিষয়ে গরু দুটির মালিক মেহের আলী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সাভারের আমিনবাজারে আমার বসতবাড়ি। এখানে সাড়ে চার বছর আগে পাগলু ও কালো মানিকের জন্ম হয়। এরপর দুটি বাচ্চা লালন-পালন করার পর বড় হয়েছে। এ দুটি গরুই গত বছর গাবতলীতে সবচেয়ে বড় গরু ছিল। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বিক্রি হয়নি। তাই এ বছর আবারও হাটে উঠিয়েছি। ভাই বিক্রি করতে না পেরে এখন অনেক লোকসানের মুখে আছি। কেননা, এ দুটি গরুর পেছনে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই হাজার টাকা করে খরচ আছে। গত বছর বিক্রি করতে পারলে কিছুটা পুষিয়ে আসত। ঈদের বাকি আর মাত্র তিন দিন। এখন পর্যন্ত কোনো ক্রেতা আসেনি। বিক্রি করতে না পারলে বোঝা হয়ে যাবে।’
একই অবস্থা পাশে থাকা ‘লাল বাহাদুরে’র। এ গরুটির দাম ১৫ লাখ টাকা হাঁকা হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ কিনতে আসেনি। বিক্রি করতে না পারলে গরুর খাওয়ার জোগান দিতে সমস্যা হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে লাল বাহাদুরের মালিক আলম মিয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সাড়ে চার বছর ধরে পালন করছি। এটি দেশি গরু। প্রতিদিন এর পেছনে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা খরচ হচ্ছে। এসব গরুকে খৈল, ভুসি, মৌসুমি সবজি খাওয়ানো হয়।
গাবতলী গরুর হাটে পাগলু। ছবি : সাইফুল সুমন
গাবতলীর পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কালো পাহাড়, সাদা পাহাড় ও লাল পাহাড় নামের তিন বড় গরুর চোখ জুড়াচ্ছে দর্শকদের। বাজারে ছোট বা মাঝারি গরু কিছুটা বিক্রি হলেও বড় গরুগুলো এখনো বিক্রি হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন। গরু নির্ধারিত জায়গায় বেঁধে নিজেরা পাশে খালি জায়গায় ঘুমাচ্ছেন। কেউ রান্না করছেন। এভাবেই সময় পার করছেন।
পাবনা থেকে আসা এ তিনটি গরুর মালিক মঞ্জুরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, তিনটি গরুর মধ্যে কালা পাহাড় তাঁর সবচেয়ে বড় গরু। এ গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। লাল পাহাড়ের দাম ১২ লাখ টাকা, সাদা পাহাড়ের দাম ১০ লাখ টাকা। তবে এখনো এসব গরুর ক্রেতা আসেনি।
এ বিষয়ে মেহেরপুর থেকে আসা সোহেল রানা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাজধানীর মানুষ ঈদের একদিন আগে কেনে। তবে আমরা বাজারের জায়গা ধরতে আগে থেকেই চলে এসেছি। বড় শখ করে পালন করা পশু ঢাকায় নিয়ে এসেছি ভালো মূল্য পাওয়ার আশায়। বাজার এখনো জমেনি।’
রাজধানীতে পশু রাখার জায়গার সংকুলানের কারণে হাটে ক্রেতাসমাগম খুবই কম। যারা এসেছে, কেনার চেয়ে বাজার যাচাইয়ে বেশি মনোযোগী তারা।