ভৈরবে হিমু পরিবহনের বৃক্ষরোপণ ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা
দেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে হিমু পরিবহন কিশোরগঞ্জের ভৈরব কাউন্টার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত ওই কর্মসূচি শহরের পাঁচটি স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে এবং বিদ্যালয়গুলোতে ফলদ ও বনজ গাছের ১০০টি চারা রোপণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের কমলপুর আমলাপাড়া উদয়ন স্কুলে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নাট্যাভিনেতা সাগর রহমান। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মোস্তাফিজ আমিন, নাট্য সংগঠক মানিক চৌধুরী, স্কুলের শিক্ষক শামীমা সুলতানা।
এ সময় আলোচনা সভায় সাগর রহমান বলেন, এক অসাধারণ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন ক্ষণজন্মা হুমায়ূন আহমেদ। তিনি তাঁর অদ্ভুত জাদুকরী ভাষায় বাংলা সাহিত্য থেকে বহুদিন দূরে থাকা পাঠককে ফিরিয়ে এনেছিলেন বইয়ে। তাঁর উপন্যাসের বিখ্যাত দুই চরিত্র মিসির আলী আর হিমু অন্যতম। এ দেশের বহু তরুণের আদর্শ আজকে তার এই বিখ্যাত চরিত্র হিমু। সারা দেশব্যাপী হিমুরা আজ নানান সমাজ সেবায় এগিয়ে আসছে। ভৈরবের হিমুরাও এর থেকে আলাদা নয়। তাদের এই বৃক্ষরোপণ আর সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার মতো আয়োজনকে আমি স্বাগত জানাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক মোস্তাফিজ আমিন বলেন, গাছ আমাদের মায়ের মতো। মা যেমন নিঃস্বার্থভাবে আমাদের সেবা দিয়ে থাকেন, তেমনি গাছও। অক্সিজেন থেকে শুরু করে ফুল, ফল, ছায়া, বাতাস এবং প্রয়োজনীয় কাঁঠ আমরা এই গাছ থেকেই পেয়ে থাকি। শুধু তাই নয়, আমাদের প্রাণরক্ষাকারী ওষুধের অন্যতম কাঁচামাল সংগ্রহ হয় এই গাছ থেকেই। হিমু পরিবহন গাছের চারা রোপণের মতো এমন প্রয়োজনীয় মহৎ কর্মসূচি গ্রহণ করায় আমি তাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
হিমু পরিবহন ভৈরব কাউন্টারের সমন্বয়ক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, একজন মানুষ যেমন অন্য কোনো মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে বা ক্ষতি করলে ওই মানুষ দ্বারা আক্রান্ত বা হামলার শিকার হয়। তেমনি প্রকৃতির ওপর আমরা অত্যাচার করতে করতে আজ আমরাও তার বিরূপ আচরণের শিকার হচ্ছি। এজন্যই এখন অতিমাত্রা এবং ঘনঘন ঝড়-বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস, বজ্রপাত আর বন্যার মুখোমুখি হচ্ছি। বৈশ্বিক উষ্ণতার কবলে পড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল ভোগ করছি। এসব থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। তাই নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তাঁর নূহাশ পল্লীকে ছায়াবীথিরূপে গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর লেখা ও সৃষ্টিতে গাছের কথা বলতেন। আমরা তাঁর সেই আদর্শকে ধারণ করে সাত বছর ধরে ভৈরবে ধারাবাহিকভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছি।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন হিমু পরিবহন ভৈরব কাউন্টারের সদস্য তুষার, সোহেল, নাঈম, জিলানী, সাগর প্রমুখ।
স্কুলটির ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা। ৫০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতির ওই প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে গাছের চারা তুলে দেন অতিথিরা।