চার ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি, মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আটক
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার চারজন ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মুফতি মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করেছে র্যাব। আজ শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ভূঁইগড় এলাকার ওই মাদ্রাসাটিতে র্যাব অভিযান চালায়। এ সময় ওই প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি সংক্রান্ত বেশ কিছু আলামত জব্দ করে র্যাব।
আটক প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি নেত্রকোনায়। ছয় বছর ধরে তিনি মাদ্রাসাটি পরিচালনা করছেন এবং পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকেন।
র্যাব জানায়, ওই মাদ্রাসায় ৯৫ জন ছাত্রী পড়াশোনা করছে। তাদের মধ্যে আবাসিক রয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ জন। সম্প্রতি মাদ্রাসাটির বেশ কয়েকজন ছাত্রীর পরিবারের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ আসে। সে অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি করে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পেয়ে শনিবার সকালে মাদ্রাসায় অভিযান চালায়। এ সময় প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী চারজন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও যৌন নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ও ছবি জব্দ করা হয়। পরে ওই শিক্ষককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি চারজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে শত শত এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
র্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর তালুকদার নাজমুস সাকিব বলেন, ‘দারুল হুদা মহিলা মাদ্রাসার বড় হুজুর মুফতি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাই যে উনি একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন। পরে তদন্তে নেমে আমরা চারজন ছাত্রীর ব্যাপারে জানতে পেরেছি তিনি তাদের সঙ্গে এ ধরনের কাজ করেছেন। মোবাইল রেকর্ডস পেয়েছি। আমরা আরো তদন্ত করব। তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদের পরে আশা করি তখন আরো বিস্তারিত জানা যাবে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে থানায় মামলা করব এবং আসামিকে থানায় হস্তান্তর করব।’
এর আগে গত ৪ জুলাই ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকায় বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার ১২ জন শিশু ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় অক্সফোর্ড হাই স্কুলের ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আরিফুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে।