আপনাদের নাকের ডগায় কীভাবে লাখ লাখ ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলে?
ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) দাখিল করা প্রতিবেদনের ওপর শুনানিতে আদালত বলেছেন, ‘আপনাদের নাকের ডগার ওপর দিয়ে কীভাবে লাখ লাখ ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলে? আগামী দুই মাসের মধ্যে ফিটনেসবিহীন গাড়ি দেখতে চান না আদালত।’
ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে বিআরটিএর দাখিল করা প্রতিবেদনের ওপর শুনানিকালে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনুদ্দিন মানিক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।
আগামী দুই মাসের মধ্যে এসব গাড়ি মালিকদের ফিটনেস নবায়ন কার্যক্রম করতে নির্দেশ দিন। অন্যথায় আদালত এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দেবেন বলেও জানান।
একই সঙ্গে আদালতের আদেশসহ ফিটনেস নবায়ন বিষয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বিআরটিএ ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) বলা হয়েছে। পরে আগামী ১৫ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ঠিক করেন আদালত।
এ ছাড়া আজ আদালতে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে লাইসেন্সধারী ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানোর দায়ে চলতি বছরে ছয় কোটি ৭২ লাখ ২৩ হাজার ৩৯২ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৯ হাজার ৮৩৭টি মামলা করা হয়েছে। একই সময়ে ফিটনেসবিহীন ২১৪টি গাড়ি ডাম্পিং করা হয়েছে। কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৭২৮ চালককে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা দেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ির সংখ্যা চার লাখ ৭৯ হাজার ৩২০টি।
গত ২৪ জুন ঢাকাসহ সারা দেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ি ও লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চান হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সারা দেশে লাইসেন্সধারী ফিটনেসহীন চার লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ি এবং লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিরুদ্ধে বিআরটিএ কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তাও জানাতে বলা হয়।
‘নো ফিটনেস ডকস, ইয়েট রানিং’ শিরোনামে গত ২৩ মার্চ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি নজরে আনা হলে গত ২৭ মার্চ হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলজারিসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন।