কুড়িগ্রামে জনপ্রতি বরাদ্দ ১.১২ টাকা, রিলিফের নামে প্রহসন
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ অভিযোগ করে বলেছেন, সারা দেশে বন্যাদুর্গতদের রিলিফ দেওয়ার নামে সরকার প্রহসন করছে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আবু সাইয়িদ বলেন, ‘কুড়িগ্রামে বিগত কয়েক দিন ধরে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আ আমীনের নেতৃত্বে রিলিফ টিম কাজ করছে। এখনো বহু প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছেনি। খাবার নেই, ওষুধ নেই এবং পানি নেই। এবার সাহায্য সংস্থার লোকজনও তেমন তৎপর নয়। অথচ বন্যার প্রকোপ এবার সবচেয়ে বেশি। আর কুড়িগ্রামে ৭০.০৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বন্যাদুর্গত ১২ লাখ মানুষের জন্য দেড় সপ্তাহে সরকার থেকে বরাদ্দ হয়েছে জনপ্রতি মাত্র ১.১২ টাকা, চাল ৬৬ গ্রাম এবং শুকনো খাবার তিন হাজার প্যাকেট। এটি রিলিফের নামে প্রহসন।’
আবু সাইয়িদ আরো জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ সাত হাজার ৯১৪ কোটি টাকা, এর সঙ্গে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট যোগ করলে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এত টাকা বাজেট বরাদ্দ সত্ত্বেও বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের চালচিত্রের তেমন পরিবর্তন হয়নি, হয়েছে গুটিকয় কর্মকর্তা, আমলা ও ঠিকাদারদের, যাঁরা বাঁধ নির্মাণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের নামে জনগণের টাকা লুটপাট করছেন।
গণফোরামের এ নেতা বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, বানভাসি মানুষের নিরাপদ জীবন ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা, সরকারি ত্রাণ তৎপরতার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন, জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণপূর্বক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ভিত্তিতে রিলিফ কমিটি করে ত্রাণ তৎপরতা চালানো দরকার। নদীভাঙন কবলিত চরাঞ্চলের বিপন্ন মানুষদের জন্য ত্বরিত গতিতে ত্রাণ তৎপরতা গ্রহণ।’
সংবাদ সম্মেলনে আবু সাইয়িদ কুড়িগ্রামের চিলমারী-রাজীবপুর ও রৌমারী এলাকাসহ অধিকতর বন্যা আক্রান্ত উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করার দাবি জানান।
বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান এমনকি প্রয়োজনে চীনের সঙ্গে একত্রে কার্যকর আঞ্চলিক উদ্যোগে পানি সমস্যার সমাধান ও নদী ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দায় আফ্রিক, মোহাম্মদ আজাদ হোসেন, লতিফুর বারি হামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।