প্রিয়া সাহাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া উচিত : ওবায়দুল কাদের
সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করা প্রিয়া সাহাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য একবার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সংবাদ সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ রোববার মেট্রোরেল প্রকল্পের অধীনে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬-এর লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নেন ওবায়দুল কাদের।
অনুষ্ঠান শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রিয়া সাহার এ রকম অভিযোগ করার কারণ নিয়ে তদন্ত করা দরকার। আমি মনে করি, দেশে ফেরার পর তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া উচিত।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের আরো বলেন, ‘প্রিয়া সাহার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও তদন্ত করতে হবে। তাঁর একটি পাবলিক বিবৃতিও দেওয়া উচিত।’
এদিকে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার বক্তব্যের জন্য আইনজীবীসহ বেশ কয়েকজন সাধারণ নাগরিক দেশের বিভিন্ন আদালতে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার আবেদন করেছেন।
গত বুধবার বিভিন্ন ধর্মের ২৭ জন ব্যক্তিকে ডেকে তাঁদের দুর্ভোগের কথা শোনেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে মিয়ানমার, নিউজিল্যান্ড, ইয়েমেন, চীন, তুরস্ক, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, জার্মানি, বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে এক নারী ট্রাম্পকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে (বাংলাদেশে) প্রায় ৩৭ মিলিয়ন (তিন কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ডিসঅ্যাপেয়ার (নিখোঁজ) হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনো সেখানে (বাংলাদেশে) ১৮ মিলিয়ন (এক কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু আমাদের (বাংলাদেশে) থাকতে সাহায্য করুন। আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।’
এ সময় ট্রাম্প জানতে চান, ‘কারা জমি দখল করেছে? কারা বাড়ি দখল করেছে?’ জবাবে ওই নারী বলেন, ‘মুসলিম মৌলবাদী গ্রুপ এগুলো করছে। তারা সব সময় পলিটিক্যাল শেল্টার (রাজনৈতিক ছত্রছায়া) পায়।’
হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটের বিবৃতিতে বাংলাদেশি ওই নারীকে মিসেস সাহা পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে জানা যায়, ওই নারীর নাম প্রিয়া সাহা।
প্রিয়া সাহা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ‘দলিত কণ্ঠ’ নামের একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে প্রিয়া সাহা ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের যে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে করেছেন, তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন নিয়ে ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছে সরকার।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের উদ্দেশ্যেই প্রিয়া সাহা এই ধরনের বানোয়াট ও কল্পিত অভিযোগ করেছেন।’