গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে: মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
শনিবার চট্টগ্রামে দলের বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নির্বাচন কমিশন পুনরায় গঠন করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন নির্বাচনে জনগণের আস্থা নেই। তাই জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন দিতে হবে।’ এ সময় আন্দোলনের জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়িতে নূর আহমদ সড়কে দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।

জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় সরকারকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দেখা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের যে সমস্ত অঞ্চলে যারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন, তাদের সঙ্গে আমি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি, একাত্মতা প্রকাশ করছি। এবং দলের সব স্তরের নেতাকর্মীদেরকে অনুরোধ করছি, তারা যেন এই বন্যার্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদেরকে এখন থানায় থানায়, পাড়ায় পাড়ায়, ইউনিয়নে ইউনিয়নে মানুষের কাছে যেতে হবে, ছড়িয়ে পড়তে হবে। জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, তাদের যে অধিকার, শুধু ভোটের নয়, বাঁচার অধিকার, নিরাপত্তার অধিকার এবং স্বাধীন থাকবার অধিকার। এই অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে আনার জন্য, বহাল রাখার জন্য সংগ্রাম করতে হবে।

সমাবেশে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা অভিযোগ করেন, সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতায় রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হচ্ছে না। অত্যাচার নির্যাতনে বিএনপি দুর্বল হয়নি দাবি করে তাঁরা বলেন, রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে হবে। জনগণকে নিয়ে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। জনগণের কাছে গিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।’

‘আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র ও জনগণকে ভয় পায় বলে জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়,’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। আজও তারা মানুষকে হত্যা করছে।’

চলতি অর্থবছরের বাজেটকে গরিব মারার বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটের পরপরই দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। দেশ ঋণের বোঝার মধ্যে পড়েছে। 

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মো. শাহজাহান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ও মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

এর আগে সমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে কাজীর দেউড়িতে আসতে থাকেন। নগরী ছাড়াও জেলার ১৪ থানা এবং ফেনী, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িসহ বিভাগের অন্যান্য জেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বলে বিএনপির নেতারা জানান।

সমাবেশস্থলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।