মাটির নিচে ল্যাপটপ!

Looks like you've blocked notifications!

পুলিশের জেরার মুখে আর মিথ্যে বলা সম্ভব হয়নি চোরদের। শেষপর্যন্ত স্বীকারই করতে হলো, মাটির নিচেই পুঁতে রাখা হয়েছে ল্যাপটপ। তবে তার আগে কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি। এক ল্যাপটপের জন্য চলেছে আট দিনের অভিযান। শুরুতে অবশ্য ধরা পড়েছিলেন চোর সর্দার। তিনি আবার হুট করেই চুরির কথা স্বীকার করে ফেলেননি। তাতে কী? কান টানলেই তো মাথা আসে। ছোট চোরের স্বীকারক্তিতেই বড় চোর ধরা খেয়ে গেলেন। তবে এর চেয়েও বড় কথা, মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা হলেও, অক্ষত অবস্থাতেই উদ্ধার হয়েছে ল্যাপটপ। আর এতেই খুশি দৈনিক জনকণ্ঠের সান্তাহারের নিজস্ব সংবাদদাতা মো. হারেজুজ্জামান হারেজ।

গত ১২ জুলাই শুক্রবার বিকেলে বগুড়ার সান্তাহার এলাকায় নিজ বাড়ি থেকেই চুরি যায় হারেজুজ্জামানের ল্যাপটপ। গতকাল শুক্রবার ল্যাপটপটি উদ্ধার করেছেন সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আনিছুর রহমান। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই চোরকে।

সাংবাদিক হারেজুজ্জামান হারেজ জানান, গত ১২ জুলাই বিকেলে বাড়িতে বসে পেশাগত কাজ শেষ করে ল্যাপটপটি চার্জে দিয়ে ৫টার দিকে সান্তাহার প্রেসক্লাবে যান তিনি। তার কিছুক্ষণ পর ব্যক্তিগত কাজে সদর দরজায় তালা দিয়ে তাঁর স্ত্রীও বাড়ির বাইরে যান। রাত পৌনে ৮টার দিকে হারেজুজ্জামানের স্ত্রী বাড়িতে ফিরে বাড়ির ওই দরজা খোলা দেখতে পান। বাড়ির ভেতরে ঢোকার পর চুরির ঘটনা বুঝতে পারেন তিনি।

পরে এ ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বাড়ির পাশে থাকা ৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। ওই ফুটেজে দেখা যায়, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের দিক থেকে তিনজন চোর ইজিবাইক নিয়ে ল্যাপটপটি চুরির পর একই দিকে চলে যায়। পুলিশ সিসি ফুটেজ পরীক্ষা করে চোরদের ও চুরির কাজে ব্যবহৃত ইজিবাইক শনাক্ত করার কাজ চালান।

পরে বুধবার বিকেলে পুলিশ শহরের লোকোপশ্চিম কলোনির ঝুপরিপট্টি থেকে ওই ইজিবাইক উদ্ধার করে। সেইসঙ্গে চোর সর্দার ইজিবাইকের মালিক ও চালক সুমন চৌধুরীকে আটক করা হয়। কিন্তু তাৎক্ষনিক স্বীকারোক্তি না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠায়।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার সকালে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনিছুর রহমান ওই পট্টিতে ফের অভিযান চালিয়ে টোটন নামের আরেক ব্যক্তিকে আটক করেন। তাঁকে জেরা করা শুরু করলে তিনি চুরির ঘটনা স্বীকার করেন এবং তাঁর দেখানো স্থানে মাটিতে পুঁতে রাখা ল্যাপটপটি অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার এবং চোর টোটনকে গ্রেপ্তার করেন। এই কাজে সার্বিক সহযোগীতা করেন পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই ওমর ফারুক। মামলাটি তদন্ত করছেন ফাঁড়ির টিএসআই আবদুল ওয়াদুদ।

সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় সাংবাদিক হারেজুজ্জামানের চুরি যাওয়া ল্যাপটপটি আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। আদালতের মাধ্যমে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ল্যাপটপটি তাঁকে ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

আনিছুর রহমান আরো বলেন, ‘সান্তাহার শহরকে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা পুলিশ বাহিনী আগামীতে সুন্দর একটি সান্তাহার পৌর শহর উপহার দিতে কাজ করে যাচ্ছি।’