শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, তিনজন নিহত
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শেরপুর সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে বিভিন্ন এলাকায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে শেরপুর-জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র সেতু এলাকায় নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁয়েছে। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্রের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে প্লাবিত করেছে সদরের নিম্নাঞ্চল।
দুপুরের দিকে শেরপুর-জামালপুর সড়কের নন্দীবাজারের পোড়ার দোকান এলাকায় কজওয়ের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হতে থাকে। এতে যেকোনো সময় শেরপুর-জামালপুরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের ১৭২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া বেশ কিছু পরিবার এখন পর্যন্ত পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
বন্যার পানিতে প্লাবিত বিভিন্ন এলাকার মাছের খামার ও ব্যক্তিগত পুকুর থেকে বিপুল মাছ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুসারে এখন পর্যন্ত বন্যায় প্রায় পাঁচ কোটি ১৮ লাখ টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে ঝিনাইগাতী উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে গতকাল বুধবার মামুন নামের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর আজ সকালে তার লাশ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
মামুন উপজেলার বিলাসপুর এলাকার মির্জা মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় বাগেরভিটা মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
গত কয়েকদিনের অতি বর্ষণ ও ভারতীয় অংশ থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ঝিনাইগাতী উপজেলাতেই দুই শিশু ও এক বৃদ্ধাসহ মোট তিনজনের মৃত্যু হলো।
মামুনের মৃত্যু প্রসঙ্গে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ঝিনাইগাতী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুল ইসলাম জানান, গতকাল বন্যার পানিতে মাছ ধরতে যায় মামুন। সে সময় সোমেশ্বরী নদীর প্রবল স্রোতে তলিয়ে যায় সে। স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে শেষমেশ ফায়ার সার্ভিসের সাহায্য চায়। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাতে মামুনের সন্ধান করতে পারেননি। পরে আজ দুপুরের দিকে অভিযানে নেমে মামুনের লাশ উদ্ধারে সক্ষম হয় ডুবুরিরা।