সিরাজগঞ্জে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ২৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
যমুনা নদীবেষ্টিত কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চলের অন্তত সাড়ে ৯০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ফসলি জমি এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২১ হাজার পরিবার।
এদিকে, যমুনা নদীর পানির প্রবল স্রোতে কাজীপুর উপজেলা পরিষদের নির্মিত রিং বাঁধের অন্তত ৬০ মিটার এলাকা ধসে নতুন নতুন এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে মানুষ গবাদি পশু আর আসবাবপত্র নিয়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁধের ওপর ঝুপড়ি ঘর তুলে কোনোমতে রাতযাপন করছেন তাঁরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কাজীপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানিয়েছেন, যমুনার পানি বাড়ার কারণে চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এ পর্যন্ত পাঁচটি উপজেলার ৯৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের ২১ হাজার ৫৫২ পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার্তদের বিতরণের জন্য ৪৯৪ টন চাল ও আট লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে এগুলো বিতরণ করা হবে।
কাজীপুর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় বলেন, ‘বাঁধ ভাঙার কারণে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা সব সময় নজর রাখছি, যাতে বাঁধ ভেঙে না যায়। আমাদের পর্যপ্ত পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী প্রস্তুত রয়েছে।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে হঠাৎ করেই বাঁধটিতে ধস দেখা দেওয়ায় বাঁধের পাশের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়। এটি কাজীপুর উপজেলা পরিষদের উদ্যেগে করা হয়েছিল। এ মুহূর্তে সেটি মেরামত করা সম্ভব নয়। আমাদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এখন পর্যন্ত ঠিক রয়েছে। কোনো সমস্যা নেই।’
কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ বিভিন্ন সময় জিআর, টিআরের অর্থ দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করে। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে বাঁধ ধসে পড়ে। বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ইঁদুরের গর্ত রয়েছে। সেখান দিয়ে পানি যাতে বের না হয়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। পানির স্রোতের কারণে এ মুহূর্তে বাঁধটি মেরামত করা সম্ভব নয়। পানি কমে গেলে মেরামত করা হবে। বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।’