জিনিসপত্রের দাম নিয়ে রাতে দুঃস্বপ্ন দেখি : বাণিজ্যমন্ত্রী
‘জিনিসপত্রের দাম নিয়ে রাতে দুঃস্বপ্ন দেখি। সকালে আরেকটি দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুম থেকে উঠি। দুষ্ট ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফালোভের কারণেই বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। পেঁয়াজ, রসুনসহ গরম মসলার পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কোনোই কারণ নেই।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটা জিনিসের আমদানি ও সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়মিত বাজার তদারকি করছে।’ ঈদ উপলক্ষে সবাই একযোগে জিনিসপত্র কিনতে ভিড় না করে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজন অনুযায়ী কিনতে তিনি সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ এবার জাতীয় রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। এ উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতি ও রপ্তানি বাণিজ্যে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদানের ফলেই ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্জিত হয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।’
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। তার পরও আমরা চীন ও ভারত থেকে টিসিবির মাধ্যমে আমাদানি করে বাজার স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও খুব তাড়াতাড়ি তা কমে আসবে।’
প্রতি বছর ঈদ আসলেই ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়। ব্যবসায়ীদের এ কারসাজি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ কি না? আপনারা ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিবারই হেরে যাচ্ছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঠিকমতোই বাজার মনিটরিং করছি। চাহিদার তুলনায় জিনিসপত্রের প্রর্যাপ্ত মজুদও রয়েছে। এ অবস্থায় দ্রব্যমূল্য বাড়ার কোনো কারণই নেই।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রমজানে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করে সবাই রমজানের আগেই একযোগে কেনাকাটায় নেমে পড়েন। এতে সাময়িকভাবে বাজারে একটি অস্থিরতার তৈরি হয়। কোরবানির ঈদের আগেও গরম মসলাসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে সবাই একযোগে বাজারে নেমে পড়েন। এতে করে বাজারে একটি সাময়িক সমস্যা তৈরি হয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগটি নিয়ে একটি সাময়িক সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেয়।’
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন। সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদ সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলেনের তৃতীয় দিনের কর্ম অধিবেশনে অংশ নিয়ে এ নির্দেশনা প্রদান করেন।
গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঁচ দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সম্মেলনের কার্য অধিবেশনগুলো সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম যাতে সাধারণ মানুষের নাগালে থাকে তার সব ব্যবস্থা সরকার করেছে। আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে।’ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতেও জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।