মানিকগঞ্জে বাল্যবিবাহের দায়ে ঘটক ও বরকে কারাদণ্ড
বাল্যবিবাহের প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ঘটক ও বরকে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার দুপুরে এই রায় দেন আদালতের বিচারক মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বিল্লাল হোসেন।
দণ্ডাদেশ পাওয়া ঘটক কাউসার হোসেনের (৩৫) বাড়ি ঢাকার ধামরাই উপজেলার চরবাউটিয়া গ্রামে। বর ইব্রাহিমের (২৮) বাড়ি একই গ্রামে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের ডায়মন্ড প্লাজার নিচতলার নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজি মো. মনিরুজ্জামানের অফিসে অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে দণ্ডপ্রাপ্ত ঘটক, বর-কনে ও কনের পরিবারের সদস্যদের পাওয়া যায়।
ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, কনের বয়স ১৪ বছর এবং নবম শ্রেণির ছাত্রী হওয়ায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৮ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ঘটক ও বরকে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযানকালে কাজিকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিল্লাল হোসেন বলেন, ডায়মন্ড প্লাজায় বেশ কয়েকজন কাজি এবং কিছু সংখ্যক আইনজীবী তাদের চেম্বারে বাল্যবিবাহ করান বলে অভিযোগ আছে। মানিকগঞ্জ জজকোর্টের আইনজীবী এবং মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট কহিনুর ইসলাম সানির চেম্বারে বাল্যবিবাহ হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাঁর চেম্বারটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করার অপরাধে এবং বাল্যবিবাহের দায়ে মানিকগঞ্জের চারজন নিকাহ রেজিস্ট্রারের নিকাহ রেজিস্ট্রি এবং তালাক রেজিস্ট্রি কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কাজি মো. শফিকুল ইসলাম ও বেতিলা মিতরা ইউনিয়নের কাজি মো. আব্দুস সালাম, ঘিওর উপজেলার বাণিয়াজুরী ইউনিয়নের কাজি মো. সাইফুল ইসলাম ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাজি এস এম সাইফুল্লাহ।
জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি মাসের ২ তারিখে জেলা রেজিস্ট্রার মুশতাক আহমেদ কর্তৃক পত্রের মাধ্যমে তাদের এই স্থগিতাদেশ জারি করা হয়। এরই মধ্যে তাদের কাছ থেকে যাবতীয় কাগজপত্র ফেরত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বিল্লাল হোসেন।