‘যৌতুকের টাকা যদি না দিস, মেয়ের লাশ পাবি খাটের নিচে’
যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী আমির হোসেন বটি দিয়ে স্ত্রী শারমিন আক্তারকে কুপিয়ে জখম করেন। কুপিয়ে আমির তাঁর শ্বশুরকে ফোন করে বলেন, ‘যৌতুকের টাকা যদি না দিস, মেয়ের লাশ পাবি খাটের নিচে।’
এরপর কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যান আমির। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকা থেকে আমিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের প্রধান উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘সেই রাতে শারমিন আক্তারকে কুপিয়ে পালিয়ে যান আমির। পরে শারমিনের চিৎকার শুনে বাড়িওয়ালি তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। খবর দেন শারমিনের বাড়িতেও। জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পরিবার গিয়ে শারমিনের লাশ শনাক্ত করে।’
‘গতকাল আমরা আমির হোসেনকে চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। ঘটনার পরে পালিয়ে তিনি ওই এলাকায় ভোলার পরিচিতদের কাছে আশ্রয় নেন। গোপন সংবাদে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমির হোসেন স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার করার কথা স্বীকার করেছেন।’
পিবিআইপ্রধান বলেন, ‘গত ৩০ জুন আমির হোসেন তাঁর শ্বশুরের কাছে গিয়ে ১০ হাজার টাকা যৌতুক চান। কিন্তু শ্বশুরের কাছে টাকা না থাকায় তাঁকে এক হাজার টাকা দিতে চান। পরে আমির বাড়িতে চলে যান। পরের দিন শারমিনকে নিয়ে আবার শ্বশুরের কাছে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। তখন শ্বশুর তাঁকে বলেন, টাকা দিতে পারব না। পরে বউকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি। রাত গভীর হলে রাগের বশে একটি বটি দিয়ে শারমিনের শরীরে বিভিন্ন স্থানে কোপান আমির। তখন শ্বশুরকে ফোন করে আমির বলেন, ‘যৌতুকের টাকা যদি না দিস, মেয়ের লাশ পাবি খাটের নিচে পাবি।’
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘ঘটনার চার মাস আগে শারমিনের সঙ্গে আমিরের বিয়ে হয়েছিল। শারমিনের বাবার বাড়ি ভোলা জেলায়। আমিরের বাড়িও ভোলায়। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তাঁরা। শারমিনের স্বামী আমির হোসেন এর আগেও দুটি বিয়ে করেছেন। একটি বাচ্চাও আছে তাঁদের। তবে শারমিনের সঙ্গে বিয়ের সময় আমির এসব তথ্য গোপন করেন। যৌতুকের জন্য বিয়ে করতেন। বিয়ে করে কাবিননামা গোপন করে আবার বিয়ে করতেন তিনি।’