জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে এবং তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন এরশাদের ছোট ভাই ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

আজ সোমবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জি এম কাদের।

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে এরশাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত কথা হয়েছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘তাঁরা (চিকিৎসক) যেটা আমাকে জানিয়েছেন, এককথায় সেটা হলো, উনার অবস্থা অপরিবর্তিত আছে। গতকাল যা ছিল, মোটামুটি সে অবস্থাতেই আছে।’

এরশাদকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘বলা হয়েছে, উনার অক্সিজেন ইনটেক বেশ ভালো। স্বাভাবিকভাবে অক্সিজেন দেওয়াতেই উনি অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারছেন। চিকিৎসকদের ধারণা, ফুসফুস ভালো ফাংশন করছে।’

এরশাদকে একটি স্পেশাল টাইপের ডায়ালাইসিস দিয়ে শরীর থেকে পানি বের করা হচ্ছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘দুই ধরনের সিস্টেমের মাধ্যমে এটা করা হচ্ছে। গতকাল যেটা তাঁরা (চিকিৎসকরা) করেছিলেন, আজকেও তাঁরা সেটা করেছেন। এখনো সেটা করবেন বলে তাঁরা বলেছেন। সেটা হলো, হেমো ডায়া ফিল্টারেশন, এটা একটা মডার্ন টেকনিক। এটার মাধ্যমে উনার মতো কনডিশনের রোগীদের ডায়ালাইসিসটা খুব সঠিকভাবে করা যায়। আরেকটা হলো, হেমো পারফিউশন। সেটা সেপটিক শকে যারা থাকেন, তাঁদের রক্তের মধ্যে প্রচুর ইনফেকশন হয়ে যায়, সেই ইনফেকশন কমানোর জন্য এটা একটা সিস্টেম। এটা তাঁরা গতকাল চালিয়েছেন, আজকেও চালাচ্ছেন। আমি যখন গেলাম, তখন ডায়ালাইসিসের মেশিনটা চালু ছিল। উনাকে ব্লাড কমপোনেন্টও দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু। সেখানে যেহেতু কিডনি যন্ত্রের সাহায্যে চালানো হচ্ছে, কিডনি ফাংশনের ব্যাপারে উনারা এখনো নিশ্চিত নয়। পরে তাঁরা এ ব্যাপারে টেস্ট করবেন। উনাদের ধারণা, কিডনি ফাংশনেও কিছুটা ইমপ্রুভ করবে।’

জি এম কাদের আরো বলেন, ‘উনার এখন যে সমস্যাটা দেখা যাচ্ছে, সেটা হলো, ডাইজেস্টিভ সিস্টেমে। আর্টিফিশিয়ালভাবে উনাকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তারদের কথা হলো, উনার ব্লাড প্রেশার স্বাভাবিক আছে, উনার হার্টবিট স্বাভাবিক আছে। মোটামুটি উনার ভাইটাল সাইনগুলো স্বাভাবিক আছে। তবে সবই হলো যন্ত্র ও ওষুধের সাহায্যে। উনারা এভাবেই চালিয়ে যেতে থাকবেন, যতক্ষণ উনি (এরশাদ) এটা গ্রহণ করতে পারবেন। একটু ইমপ্রুভমেন্ট দেখলেই উনারা ওষুধের মাত্রা কমিয়ে দেবেন। সেটা যদি উনি সাকসেসফুলি গ্রহণ করতে পারেন, তাহলে উনার অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলা যাবে। তবে যতক্ষণ উনি পারবেন না, ততক্ষণ উনারা এটা চালিয়ে যাবেন। আর কোনো সময় যদি দেখা যায়, এই চিকিৎসা উনি গ্রহণ করতে পারছেন না, শরীরে কাজ করছে না। তাহলে বুঝতে হবে, উনার অবস্থা অবনতির দিকে। তবে এই অবনতিটা যদি বড় ধরনের অবনতির দিকে চলে যায়, তাহলে হয়তো উনার জীবনের শঙ্কা দেখা দিতে পারে।’

জি এম কাদের আরো বলেন, ‘এই তিনটি স্টেজের মধ্যে তাঁরা বলেছেন, উনি স্থিতিশীল আছেন। উনারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অবস্থার উন্নতি করার জন্য। এবং যেন অবনতি না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখছেন।’

জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত উনার এই অবস্থা থাকবে, তত দিন পর্যন্ত আমি আপনাদের ব্রিফ করব। এর মধ্যে উনার অবস্থার উন্নতি হলে সময়মতো তা জানানোর চেষ্টা করবো।’