রিফাত হত্যা : হাইকোর্টে জেলা প্রশাসনের অগ্রগতি প্রতিবেদন
বরগুনায় স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রিফাত হত্যার সঙ্গে জড়িত এজাহারভুক্ত এখন পর্যন্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার আছেন চারজন।’
বরগুনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশের সুপারের দেওয়া এই প্রতিবেদনে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘সন্দেহভাজন আসামি ধরতে অভিযান চালানোর সময় পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা চালালে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি করতে বাধ্য হয়। পরে গোলাগুলি থেমে গেলে পুলিশ সেখান থেকে নয়ন বন্ডের লাশ উদ্ধার করে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
এর আগে গত ২৭ জুন এই অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা যেন দেশত্যাগ না করতে পারে, সে জন্য সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ওই দিন সকালে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনলে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ একদল যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো দা দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। রিফাতের স্ত্রী আয়শা হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন; কিন্তু তাদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়।
এ হত্যার ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বৃহস্পতিবার সকালে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মামলার ২ নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী (২৩), ৪ নম্বর আসামি চন্দন (২১), ৯ নম্বর আসামি মো. হাসান (১৯), ১১ নম্বর আসামি মো. অলি উল্লাহ অলি (২২), ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় (২১),মো. নাজমুল হাসান (১৯), তানভীর (২২), মো. সাগর (১৯), কামররুল হাসান সাইমুন (২১) ও রাফিউল ইসলাম রাব্বি।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে চন্দন ও হাসান সাত দিনের এবং সাগর, সাইমুন ও নাজমুল পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। এ ছাড়া রিফাত হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার ১১ নম্বর আসামি অলি ও তানভীর।