তিনদিন বয়সী বিড়ালছানাকে যেভাবে মেরেছেন ইশরাত
মা বিড়াল তিন দিন বয়সের ছানাকে ইশরাত জাহান মেহ্জাবীনের বাসার খাটের নীচে রেখে যায়। এরপর রাত ১০ টায় ইশরাত তার রুমে রেক্সিনের কাগজের ওপর ওই বিড়ার ছানাকে রেখে প্লাস্টিকের পাইপ এবং ছুড়ি দিয়ে হত্যা করে।
সেই বিড়াল ছানাকে হত্যার বর্ণনা দিয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে আসামি ইশরাত জাহানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
আজ সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মো. আশরাফ জানান, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইন, ১৯২০ এর ৭ ধারায় অভিযোগপত্রটি দাখিল করা হয়েছে। আগামী ৯ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে।
অভিযোগপত্রে আরোও জানা যায়, ইশরাত বিড়াল ছানাটি হত্যা করার সময় সেটি তার মোবাইলে ভিডিও করে। এরপর বিড়াল ছানাটির মৃত দেহ এবং প্লাস্টিকের পাইপটি একটি পলিথিনে ভরে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেয়। পরদিন ময়লাওয়ালা ময়লা নেয়ার সময় ঝুড়ি থেকে এগুলো নিয়ে যায়। এরপর ১৯ মার্চ রাতে ইশরাত তার ফেসবুক আইডিতে বিড়াল ছানা হত্যার ভিডিওটি আপলোড করে। আবার ওই রাতেই ভিডিওটি মুছে দেয়।
নথি থেকে জানা যায়, ‘কেয়ার ফর পস’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসাইন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার পরে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে ইশরাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।পরদিন তাকে সিএমএম আদালতে হাজির করা হলে ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মন্ডল জামিন মঞ্জুর করেন।
এজাহার থেকে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ রাতে একটি বিড়ালছানা হত্যা করেন ইশরাত। এর পরে গত ১৯ মার্চ নিজের ফেসবুক আইডিতে হত্যার ভিডিও ও মৃত বিড়ালের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বেশ কিছু ছবি আপলোড করেন তিনি।
এর আগে গত বছরের ১০ মে রাজধানীর রামপুরায় দুই মাসহ ১৪ কুকুর ছানাকে জীবন্ত মাটিচাপা দিয়ে হত্যার দায়ে এক যুবককে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন সিএমএম আদালত। মামলাটি করেন পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রাকিবুল ইসলাম এমিল।
জানা যায়, এর আগেও প্রাণী হত্যার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। কিন্তু সেসব মামলায় শুধু অর্থদণ্ডের মাধ্যমে পার পেয়ে যান আসামিরা।
প্রাণী কল্যাণ আইনে যা আছে?
বাংলাদেশে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইন, ১৯২০-এর ৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অকারণে শুধু সহিংসতা প্রদর্শনে কোনো প্রাণীকে হত্যা করে তাহলে তিনি অর্থদণ্ড, কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
আইনটিতে আরো বলা হয়েছে, প্রাণী হত্যার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ হতে পারে। তবে কোনো গোষ্ঠী ধর্ম বর্ণের রীতি পালনের জন্যে বা কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে এমনটা ঘটলে তা অপরাধ বলে গণ্য করা হবে না।