চীনের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার বিকেলে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট বিকেল ৫টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
ফ্লাইটটির স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১২টায় চীনের লিয়াওনিং প্রদেশের দালিয়ান ঝৌশুজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনা তাঁর সফরকালে আগামী ২ জুলাই দালিয়ানে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি বেইজিংয়ে ৪ ও ৫ জুলাই যথাক্রমে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বার্তা সংস্থা বাসস এ তথ্য জানিয়েছে।
দালিয়ান বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানানো শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে শাংগ্রি-লা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। লিয়াওনিং প্রদেশের বন্দরনগরী দালিয়ান সফরকালে তিনি এখানেই অবস্থান করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার বিকেলে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ছবি : বাসস
১-৩ জুলাই দালিয়ানে ‘অ্যানুয়াল মিটিং অব দ্য নিউ চ্যাম্পিয়ন্স ২০১৯’ শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলন ‘ডব্লিউইএফ সামার দাভোস’ হিসেবেও পরিচিত।
প্রধানমন্ত্রী ২ জুলাই সকালে দালিয়ান আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডব্লিউইএফ সামার দাভোসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা বিকেলে ডব্লিউইএফের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ এবং দালিয়ান আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক অধিবেশনে প্যানেল সদস্য হিসেবে থাকবেন।
৩ জুন স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় চীন সরকারের সরবরাহ করা বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে করে বেইজিংয়ের উদ্দেশে দালিয়ান ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ফ্লাইটটির স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া ১২টায় বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা দিয়ে দিয়াওয়ুতাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। চীনের রাজধানী বেইজিং সফরকালে তিনি এখানে অবস্থান করবেন। বিকেলে তিনি বেইজিংয়ের লিজেনদালি হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনা ও ভোজে অংশ নেবেন।
শেখ হাসিনা ৪ জুলাই সকালে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে তাঁকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং হিরোস মেমোরিয়ালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে তিনি গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সেই সঙ্গে তিনি একই জায়গায় চীনের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন। একই দিন বিকেলে তিনি চীনা ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেবেন।
৫ জুলাই সকালে চীনা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পেনগোল ইনস্টিটিউট’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিভিন্ন চীনা কোম্পানির সিইও শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর আবাসস্থলে সাক্ষাৎ করতে যাবেন। সেই সঙ্গে এনপিসি চেয়ারম্যান লি ঝাংশুর সাথে প্রধানমন্ত্রীর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী দিয়াওয়ুতাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। পাশাপাশি সন্ধ্যায় তিনি একই জায়গায় চীনা প্রেসিডেন্ট আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর চীন সফর শেষ করে ৬ জুলাই স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় ঢাকার উদ্দেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ত্যাগ করবেন। ফ্লাইটটি একই দিনে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ২৩ জুন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকবে। সেই সঙ্গে প্রাসঙ্গিকভাবে বিনিয়োগের বিষয়টি স্থান পাবে।
‘মিয়ানমারে অনেক বিনিয়োগ করেছে চীন। তারা বাংলাদেশেও বিনিয়োগ করেছে। শান্তি ও শৃঙ্খলা না থাকলে এ বিনিয়োগ কোনো সুফল বয়ে আনবে না। আমরা এ কথাও চীনকে জানিয়ে দেব,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।