সাতকানিয়ায় একই দিনে দুই যুবলীগ নেতার মৃত্যু
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় পৃথক ঘটনায় একই দিনে দুই যুবলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) ও মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ওই দুই নেতার মৃত্যু হয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের করইয়ানগর এলাকার আবদুস ছবুরের ছেলে ও ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা মোহাম্মদ জিয়াবুল (৩৬) এবং কেওচিয়া ইউনিয়নের মাইজপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে ও কেওচিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ এরশাদ (৩৫)।
গতকাল সকাল ৭টার দিকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জিয়াবুলের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি নিহত জিয়াবুলের এলাকায় একটি পুকুর থেকে মাছ চুরির ঘটনা ঘটে। জিয়াবুল ওই ঘটনায় জসিম নামের স্থানীয় এক যুবলীগ কর্মীর জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে প্রতিবাদ জানান।
তারই জেরে গত ২১ জুন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এলাকাবাসী মাছ চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ঠাকুরদীঘির পশ্চিম পাশে নেজামের দোকান এলাকায় একটি ঘরে জসিমকে আটকে রাখে। জিয়াবুলও সে সময় উপস্থিত ছিলেন। এরই একপর্যায়ে কৌশলে জসিম ওই ঘরের পেছন দিকের বেড়া খুলে বের হয়ে একটি কাঠের টুকরা দিয়ে জিয়াবুলের মাথা ও মুখে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয় লোকজন আহত জিয়াবুলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে চমেক হাসপাতালে পাঠান। সেখানেই গতকাল সকালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিউল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাছ চুরির ঘটনার প্রতিবাদ করায় জিয়াবুলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তারপর থেকে জসিম পলাতক রয়েছেন। জসিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।’
এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। জসিমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে আরেক ঘটনায় গতকাল রাত ১২টার দিকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যু হয় কেওচিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এরশাদের।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে বাজালিয়া ইউনিয়নের মাহালিয়া রাস্তার মাথা এলাকায় কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন এরশাদ। পরে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক এরশাদকে চমেক হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু সেখানে আইসিইউতে সিট খালি না থাকায় তাঁকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাতে এরশাদের মৃত্যু হয়।
এরই মধ্যে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে এরশাদকে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ সাঈদ, নুরুল আবছার চৌধুরী, কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, যুবলীগ নেতা এ কে এম আসাদ, আব্দুল গফুর, আ স ম ইদ্রিছ, ওসমান আলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জানাজায় অংশ নেয়।
এদিকে একই দিনে দুই নেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া বিরাজ করছে স্থানীয় যুবলীগে।