খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বাঁধা নিখোঁজ পোশাকশ্রমিকের লাশ উদ্ধার
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় নিখোঁজের দুদিন পর রড-সিমেন্টের পাকা খুঁটির সঙ্গে হাত-পা ও কোমর বাঁধা পোশাকশ্রমিক এক নারীর লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শ্রমিকের নাম সাবিনা আক্তার (২২)। তিনি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার জোঁকা গ্রামের লাল মিয়ার মেয়ে।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী বাজার এলাকার অগ্রণী ব্যাংকের পেছনের একটি পুকুরে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অর্ধউলঙ্গ এক নারীর লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
এসআই জাহাঙ্গীর জানান, সাবিনা মঙ্গলবার রাতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। লাশ উদ্ধারের সময় তাঁর পরনে শুধু কামিজ ছিল। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে, নিহতের স্যালোয়ার দিয়ে তাঁর হাত-পা ও কোমর ওই পুকুরের একটি সিমেন্টের পাকা খুঁটির সঙ্গে পানিতে বাঁধা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে হত্যা করে ঘাতকরা। পরে পুকুরের পানিতে যাতে ভেসে না উঠে সেজন্য লাশটিকে ওই খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে রেখে পালিয়ে যায় তারা।
নিহতের খালা ছোলেমা বেগম ও স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন সাবিনা আক্তার। সেখানে পরিচয়ের সূত্রধরে ভালোবেসে প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় তেলীপাড়া এলাকার আকতার হোসেনের ছেলে নাহিদের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। নাহিদের পরিবার এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় এ দম্পতি সূর্য নারায়ণপুর গ্রামের কামাল হোসেনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সাবিনা আগের চাকরি ছেড়ে শ্রীপুর উপজেলার ধলাদিয়া গ্রামের শারমিন টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় শ্রমিক পদে চাকরি নেন। বিবাহিত জীবনে তাঁদের দেড় বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহত শ্রমিকের খালা আরো জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে এক যুবকের সঙ্গে মোটরসাইকেলে চড়ে বাসা থেকে বের হন সাবিনা। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। বিভিন্নস্থানে খোঁজ করেও তাঁর কোনো সন্ধান মিলেনি। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার তাঁর লাশ পাওয়া যায়। ওই যুবকটির সঙ্গে সাবিনা প্রায় কথা বলতেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত আটক করা সম্ভব হয়নি।