আশপাশের লোক কেন এগিয়ে এলো না, বরগুনার ঘটনায় তথ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন
বরগুনায় স্ত্রীর সামনে নেয়াজ রিফাত শরিফ হত্যার ঘটনায় তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত বর্বরোচিত, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমি নিজের কাছে প্রশ্ন করেছি, আশপাশের লোকগুলো কেন এগিয়ে এলো না?’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ‘মিডিয়া, প্রচার ও ডকুমেন্টেশন উপকমিটি’র সভাশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে তাঁর (রিফাত শরিফ) স্ত্রী যেভাবে দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে, তা নিশ্চয়ই সমাজে প্রশংসার দাবি রাখে। নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল, তাঁকে আমি সম্মান জানাই, শ্রদ্ধা জানাই। একইসাথে আমার নিজের কাছেই প্রশ্ন, আশপাশের লোক কেন এগিয়ে এলো না। সরকার এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর, ইতিমধ্যেই একজন গ্রেপ্তার হয়েছে এবং সমস্ত অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হবে।’
গতকাল বুধবার সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে তাঁর স্বামী নেয়াজ রিফাত শরিফকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। স্ত্রী ও এক যুবক বাধা দিয়েও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি।
হামলার পর শরিফকে গুরুতর আহতাবস্থায় প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিক তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভর্তির এক ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শরিফের মৃত্যু হয়।
শরিফকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সন্ত্রাসী দুই যুবক ধারালো দা দিয়ে একের পর এক কোপাতে থাকে শরিফকে। এ সময় শরিফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুই সন্ত্রাসীকে বারবার প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এ ঘটনাটি পুলিশের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় ছিল। নিহত রিফাত শরিফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুল হালিম দুলাল শরিফ। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে রিফাত।
ভিডিওচিত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, ভিডিওচিত্রে যে দুই সন্ত্রাসীকে কুপিয়ে জখম করতে দেখা গেছে, তাদের একজনের নাম নয়ন বন্ড এবং অন্যজন রিফাত ফরাজী। তাঁরা উভয়েই স্থানীয়ভাবে ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এসব ঘটনায় একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছে বলে বরগুনা থানা সূত্রে জানা গেছে।