‘লেখাপড়া শিখলেই ধান কাটা যাবে না, এই মানসিকতা পরিহার করতে হবে’
কোনো কাজই যে ছোট নয়, বা মাঠে কায়িক পরিশমের কাজ সামাজিক মর্যাদায় যে কোনো ভাবেই খাটো হতে পারে না, তা সকলকে অনুধাবন করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোনো কাজ যে ছোট কাজ নয়, এই কথাটাও মানুষকে বোঝাতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লেখাপড়া শিখলেই আমি ধান কাটতে পারব না, এই যে মানসিকতা— তা পরিহার করতে হবে।’ ধান কাটার লোক না পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ছাত্রলীগকে নিজ নিজ এলাকায় ধান কাটায় নেমে যাওয়ার হুকুম দেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার সকালে রাজধানীর শাহবাগের বিসিএস প্রশাসন একাডেমি মিলনায়তনে ১১০, ১১১ ও ১১২তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
নবীন সরকারি কর্মচারীদের কেবল চাকরির জন্য চাকরি নয়, সেবার মানসিকতায় দেশপ্রেম, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং উদ্ভাবনী চিন্তার প্রসার ঘটিয়ে কর্মক্ষেত্রে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাজটাকে কেবল চাকরি হিসেবে নিলে হবে না। দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য দেশপ্রেম এবং কর্তব্যনিষ্ঠা নিয়ে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের ভেতরে ইনোভেটিভ চিন্তা-ভাবনা থাকতে হবে। নিজের ভেতরে একটা আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। কোনো কাজ পারব, কি পারব না এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগলে চলবে না। হ্যাঁ, আমি পারব, সেই বিশ্বাসটা সব সময় নিজের ওপর রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা চাইতেন বাঙালিরা রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে তাই পৃথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং আমরা তা করতে পারব। এই কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে, এই আত্মবিশ্বাসটা থাকতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে সবথেকে বড় কথা আত্মবিশ্বাস। যেকোনো একটা কাজ করতে গেলে কীভাবে করব, কীভাবে হবে, কয় টাকা আসবে, কোথা থেকে টাকা পাব-একদম দুশ্চিন্তা না করে কোন কাজটা করে উন্নতি করা সম্ভব সেটা নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এম আশিকুর রহমান, জন প্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রতিষ্ঠানের রেক্টর কাজী রওশন আরা আখতার স্বাগত বক্তৃতা করেন।
১১০, ১১১ ও ১১২তম কোর্সের রেক্টর পদক জয়ী তিন শিক্ষার্থী মাহবুব উল্লাহ মজুমদার, রঞ্জন চন্দ্র দে ও মাবরুল আহমেদ অনিক অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ১১০, ১১১ এবং ১১২তম আইন ও প্রশাসন কোর্সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন এবং তাঁদের সঙ্গে পৃথক ফটো সেশনে অংশগ্রহণ করেন। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।
শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারীদের জনসেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করে যাওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি এইটুকু অনুরোধ করব যে, যেখানে যাবে কেবল চাকরির স্বার্থে চাকরি করা নয়, জনসেবা করা, দেশসেবা করা, দেশকে ভালোবাসা, মানুষকে ভালোবাসা-এই কথাটা মনে রাখতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই আপনারা পারবেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। এই কথাটা আমি বিশ্বাস করি।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর উন্নয়নের সুফল এ সময় তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারীদের নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামের মানুষ শহরের সুযোগ-সুবিধা পাবে। এটাই হচ্ছে আমার গ্রাম আমার শহর।’
বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের সে স্বীকৃতি অর্জন করেছে তা ধরে রাখায় তিনি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে সন্ত্রাস, মাদক এবং জঙ্গিবাদ মুক্ত রাখতে এ সময় সবার প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগের সরকারের ৬১ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে এবার আমার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছি এবং ১৯ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের জায়গায় দুই লাখ দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিটি অর্থ জনগণের অর্থ সেটা মনে রাখতে হবে। আজকে আমরা বেতন-ভাতা যা কিছুই পাচ্ছি, তা আমাদের দেশের কৃষক-শ্রমিক মেহনতি জনতার ঘামে উপার্জিত অর্থ। কাজেই তাঁদের ভাগ্যের পরিবর্তন করা, তাঁদের উন্নতি করাটাই আমাদের লক্ষ্য।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে মর্যাদা দিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে এ সময় ব্যক্তিজীবনে পিতা-মাতার কাছ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা অনুযায়ী রিকশাচালককে আপনি সম্বোধন করা, ড্রাইভারকে সাহেব বলে সম্বোধনের পারিবারিক শিক্ষার উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৪১ সালের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার সময় আজকের প্রজন্মই সে সময়ে অনেক উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত হবে। কাজেই এখন থেকেই সে দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মওলানা ভাসানী, শামসুল হকসহ আওয়ামী লীগের সাবেক নেতাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
১৭৫৭ সালে ২৩ জুন, পলাশীর আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সৃষ্টিই হয়েছিল এ দেশকে স্বাধীনতা এনে দেওয়ার মাধ্যমে শোষিত বঞ্চিত মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। তাই, এই দিনেই পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে দলটির জন্ম। তিনি এ সময় ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের ডন পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী সামরিক ও বেসামরিক চাকরিতে পূর্ব বাংলার জনগণের বঞ্চনার চিত্র উল্লেখ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশিদের মাঝে বাঙালি জাতিসত্ত্বার উন্মেষ ঘটানোর ২৩ বছরের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকারের বিগত ১০ বছরের ধারাবাহিক শাসনে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়েছে।
তাঁর সাম্প্রতিক সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে যোগদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিষয়ে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করেন। ‘তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রিজার্ভ, ডলারের দাম এবং জাতীয় বাজেট সম্পর্কে জানতে চান এবং বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আজ বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সবাই এখন এ কথাটি বলে যাচ্ছে।’
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কয়টি দেশ দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে দক্ষিণ এশিয়ায় তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর অপশাসন, দেশের ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র, দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন করণীয়গুলো এদিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ঘুরে ফিরেই আসে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা হয়তো দেখে যেতে পারব না। কিন্তু, আজকের যে প্রশিক্ষণার্থী তারাই আমার ’৪১ সালে সোনার বাংলা গড়ার কারিগর। সেজন্যই আমাদের আজকের প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। কারণ, আমাদের কয়েকটি প্রজন্মকে দেশের বিজয়ের এবং সংগ্রাসের এই ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি, ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। যেটা একটি জাতির জন্য চরম সর্বনাশের।’
শেখ হাসিনা এ সময় তাঁর পূর্ববর্তী সরকারগুলোর সময় দেশের উন্নতি না হওয়ার জন্য দেশের সঠিক ইতিহাস লুকিয়ে রাখার অপচেষ্টায় পরাজিতদের পদলেহনকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যদি আমার বিজয়ের ইতিহাস জানতে না পারি এবং পরাজিতদের পদলেহন করতে থাকি থাহলে নিজের পায়ে দাঁড়াবো কিভাবে? সেজন্য ’৭৫ এর পর ২১ বছর বাংলাদেশ উঠে দাঁড়াতে পারেনি।’ তিনি বিএনপির ভ্রান্তনীতি বিশেষ করে দেশকে বিদেশি সাহায্যের আশায় আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে না তুলে ভিক্ষুক বানিয়ে রাখার নীতির কঠোর সমালোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর সংসদে যখন এই ঘোষণা দিলাম তখন বিরোধীদলে থাকা বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বললেন-খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না। কারণ, বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়েছিল বাংলাদেশ পরনির্ভরশীল হয়ে থাকবে আর বিদেশ থেকে যে সাহায্য আসবে তা লুটপাট করে নিজেরা সম্পদশালী হবে এবং তাই তারা করেছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ ভাগ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। মাথাপিছু আয় এক হাজার ৯০৯ ডলারে আমরা উন্নীত করেছি, এটাকে আমাদের আরো বাড়াতে হবে। কারণ, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে প্রবৃদ্ধিকে ৭ ভাগে উন্নীত করে যান, যেটা ’৭৫-এর পর আর থাকেনি।
সে সময় স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশ শাসনে থাকায় তারা চায়নি বাংলাদেশ উঠে দাঁড়াক, বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আমেরিকায় দারিদ্র্যের হার ১৭/১৮ ভাগ থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জন করতে হলে আমাদের অতি দরিদ্রের হার আমেরিকার থেকে অন্তত এক ভাগ হলেও কমানো আমাদের লক্ষ্য। তিনি এ সময় দারিদ্র্য বিমোচনে তাঁর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয় কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, ‘কেউ যেন কর্মবিমুখ না হয় আবার কেউ যেন না খেয়ে না থাকে তারমধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করেই আমাদের এই কর্মসূচিটি দেশব্যাপী পরিচালিত হচ্ছে। যাতে দরিদ্ররা স্বনির্ভর হয়ে গড়ে উঠতে পারে।’
শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে আমাদের অনেক কর্মযজ্ঞ চলছে।’তিনি বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার সারা দেশে পাঁচ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে, সমগ্র দেশকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার আওতায় নিয়ে এসেছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, ন্যাশনাল ই সার্ভিস সিস্টেম চালু, পাঁচ হাজার ১০৮টি সরকারি দপ্তরে ই ফাইলিং কার্যক্রম চালু করেছে। ফলে, বিদেশে গেলে সেখান থেকে ফাইল সই করে দ্রুতগতিতে দেশে পাঠাতে পারছি।’
প্রধানমন্ত্রী মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এই সময় আরো অনেক বেশি জনবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আমি এইটুকুই বলব যে, মাঠ প্রশাসনে যারা কাজ করবেন তাঁরা ঐখানকার মানুষের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। আর তাঁরা (জনগণ) যেন ন্যায় বিচার পায় সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। শুধু গতানুগতিক ভাবে দেশ চালালে চলবে না। দেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন করে একদম তৃণমূল পর্যায় থেকে গড়ে তুলতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর লক্ষ্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুফল তুলে ধরে বলেন, ‘দেশটাকে যদি আমরা আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তাহলে সবার সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়বে।’
সরকারি কর্মচারিদের বেতন-ভাতা এবং আবাসন সুবিধাসহ অন্যান্য সুযোগ সৃষ্টিতে তাঁর সরকারের পদক্ষেপ সমূহ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি সবসময়ই চেয়েছি যারা কাজ করবে তাঁদের একটা জব স্যাটিসফেকশন থাকতে হবে। কাজেই, তাঁদের বেতন-ভাতা, চলাচল সবকিছুর ব্যবস্থা করার দায়িত্ব আমাদের। সেজন্য, আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যেও যতটা পেরিছি সেই সুযোগটা সৃষ্টি করে দিয়েছি।’
পদোন্নতিকে একটি রুটিন কাজ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, সবার যথাযথ প্রদোন্নতি প্রদানের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। এজন্য ২৮টি মামলা লড়ে এই পদোন্নতির পথকে সুগম করা হয়েছে।
জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন এবং সমগ্র জীবন বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে তিনি জেল, জুলুম অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে গেছেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এই মহান নেতাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই আমরা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময়কে মুজিব বর্ষ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। তিনি নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতায় আগামী প্রজন্মের জন্য সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য তার সরকারের শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ সম্পর্কেও আলোকপাত করেন।