ব্যাংকিং খাতে কোনো সংকট নেই : পরিকল্পনামন্ত্রী
দেশের ব্যাংকিং খাতে কোনো সংকট কিংবা দুরাবস্থা নেই বলে দাবি করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেন, এমন কিছু হয়ে যায়নি যে একদম কলাপ্স হয়ে যাবে। ব্যবসা বাণিজ্য চলছে, ব্যাংকের কেনো চেক ফেরত যাচ্ছে না। সংকট বা ভীতিকর কিছু দেখছি না। আজ শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
‘অর্থনৈতিক ভাবনা ও সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞসহ রাজনীতিকরা তুলে ধরেন বাজেট বাস্তবায়নের নানা চ্যালেঞ্জ, প্রবৃদ্ধিসহ টেকসই উন্নয়নের কথা। তারা জানান, আমদানি-রপ্তানি ঘাটতি, ব্যাংকিং খাতের দুরাবস্থা এবং ক্রমাগত ঋণ বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে দেশ। জাতীয় বাজেটে দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অসমতা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তার মতো সমস্যাগুলো নিয়ে আলোকপাত করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতি ও উন্নয়ক বিশ্লেষকরা। সমালোচনা করেন ব্যাংকিংখাতের দুরাবস্থা নিয়েও। তবে ব্যাংকিংসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সঠিকভাবেই চলছে বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।
অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম জাহান বলেন, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে কিন্তু তা পরিবেশকে নষ্ট করে। প্রবৃদ্ধি হচ্ছে কিন্তু কর্মনিয়োজন হচ্ছে না। প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, কিন্তু সেটার সঙ্গে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার কিন্তু কোনো মিল নেই। আমার মনে হয়, এই রকমের প্রবৃদ্ধি আমাদের পরিহার করা উচিত।
অর্থনীতিবিদ ড. আবু আহমেদ বলেন, নতুন কয়েকটা ব্যাংক দেওয়া হয়েছে। আমি জানি না এগুলো আদৌ টিকে থাকবে কিনা। এরা কিন্তু প্রতিযোগিতা করে বেশি বেশি লাভ দেওয়ার কথা বলে টাকা নিচ্ছে, এরা কোথায় বিনিয়োগ করবে? ওদের টাকাই বা নিবে কে? আমি এটা বুঝি না।
বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, এটুআই প্রকল্পের আওতায় যাদেরকে স্টার্টআপ মূলধন দেওয়া হয়েছিল তাদের যে অভিজ্ঞতা সেটার সাপেক্ষে ১০০ কোটি টাকা যেটা এবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা ব্যয় করলে অন্তত একটা উদাহরণ তৈরি হবে যাতে সামনের বছর আমরা এক হাজার কোটি করতে পারি।
লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. সিনহা এমএ সাঈদ বলেন, যেখানে ৬৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে সেখানে বাজেটটা যদি আপনে আরো বড় করে দেন অথচ তা বাস্তবায়নের কাঠামো আপনার হাতে নেই। তাতে কী দাঁড়ালো। এই যে বৈসাদৃশ্য, এগুলো সরকারি দলের লোকদের চিন্তা করতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সুশাসনের অভাবসহ সরকারের নানা সমালোচনা করেন।
সভায় বক্তারা বলেন, মূল্য সংযোজন কর সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম বড় খাত। জনগণের ওপর এই করের বোঝা থাকলেও মানুষ বিদ্যুৎ গ্যাস, সুপেয় পানির মতো নাগরিক সেবা ঠিকমতো পায় না।