কিশোরগঞ্জে বিএনপির ৯৫ নেতাকর্মী জেলহাজতে
নাশকতার মামলায় কিশোরগঞ্জে বিএনপির ৯৫ নেতাকর্মীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কুলিয়ারচর থানায় চারটি, ভৈরব থানায় তিনটি, কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় তিনটি এবং করিমগঞ্জ থানায় একটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।
আজ বুধবার সকালে জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শরীফুল আলমসহ ৯৫ জন নেতাকর্মী বিভিন্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর মধ্যে শরীফুল আলমসহ ৯৫ জন নেতাকর্মী বিশেষ ট্রাইবুনালে পাঁচটি মামলায় এবং প্রথম অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে দুটি মামলায় জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম সব কটি মামলায় আটজনের জামিন মঞ্জুর করলেও শরীফুল আলমসহ ৭৮ জনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠনোর নির্দেশ দেন।
এর আগে প্রথম অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুর রহমান শুনানি শেষে দুটি মামলায় শরীফুল আলমসহ তিনজনের জামিন মঞ্জুর ও আটজনের জামিন নামঞ্জুর করেন।
এ ছাড়া জেলা জজ আদালত ও প্রথম অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার তিনটি এবং করিমগঞ্জ থানার একটি মামলায় ১৭ জনের জামিন নামঞ্জুর করেন বিচারক।
পরে কড়া পুলিশ প্রহরায় শরীফুল আলমসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
৯৫ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে আদালত প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল আদালত এলাকা থেকে শুরু বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
জামিন বাতিল হওয়া উল্লেখযোগ্য অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কুলিয়ারচর উপজেলা যুবদলের সভাপতি আজহার উদ্দিন লিটন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন, ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ছয়সূতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সালাউদ্দিন মোরশেদ বাবুল, রামদি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজনু মিয়া ও সদর উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম মোল্লা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে গাড়ি পোড়ানো, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ট্রেনে অগ্নিসংযোগ ও রেলপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়।
মামলায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জেলা সভাপতি ও সাবেক পিপি জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক আইনজীবী আসামিপক্ষে জামিন আবেদনের শুনানিতে অংশ নেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাহ আজিজুল হক।