ছাত্রলীগ নেতা অহিদকে হত্যার দায়ে চারজনের যাবজ্জীবন
মাদারীপুরের সরকারি নাজিম উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এমএ শেষ বর্ষের ছাত্র অহিদুজ্জামান অহিদ হত্যা মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আজ বুধবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন লেনিন বেপারী, শাহাবুদ্দিন দর্জি, রেজাউল বেপারী ও এম এম ফয়সাল আহমেদ। এর মধ্যে রেজাউল বেপারী পলাতক।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মো. মাহবুবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, রায়ে আসামিদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তা দিতে ব্যর্থ হলে দুই মাসের কারাদণ্ড ভোগের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া মহিউদ্দিন দর্জি নামে এক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি নাজিম উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ প্যানেল হতে কমনরুম সেক্রেটারি পদে নির্বাচিত হন অহিদ। বন্ধু মহিউদ্দিন, লেলিন, শাহাবুদ্দিন, ফয়সালের সঙ্গে অহিদ একসঙ্গে চলাফেরা করতেন।
একসময় লেলিনের চাচা রেজাউল মহিউদ্দিনকে ইতালিতে চাকরি দেন। মহিউদ্দিন ইতালিতে গিয়ে রেজাউলের সঙ্গেই বসবাস করতেন।
পরবর্তী সময় অহিদ ইতালি যাওয়ার জন্য মহিউদ্দিন ও রেজাউলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং মহিউদ্দিনের কথামতো রেজাউলকে ১০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু অহিদ ইতালি যেতে পারেননি। পরে মহিউদ্দিন জানান, রেজাউল টাকা ফেরত দেবেন।
মাঝে অহিদ এলাকায় তিথি নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। পরে জানতে পারেন, তিথিকে লেলিনের চাচা রেজাউল ভালোবাসতেন। এর জের ধরে রেজাউল ইতালি বসেই অহিদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনায় তিনি মহিউদ্দিনকেও যুক্ত করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ শাহাবুদ্দিন, লেলিন ও সেলিম ছাত্রলীগ নেতা অহিদকে টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেয়। তারপর মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার কাশিমপুর সাকিনস্থ চর দীঘলিয়া শাহ বেপারীর ভুট্টাক্ষেতে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ৭ মার্চ মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানায় দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪/১০৯ ধারায় মো. আবদুল ছালাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে ২০১৪ সালের ২২ নভেম্বর মানিকগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বিচার শুরু হয়।