বালিশ কেনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন : প্রধানমন্ত্রী
সরকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বালিশ কেনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। আজ সোমবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের অনুপস্থিতিতে তাঁর পক্ষে আজ বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এক হাজার ১৮৪ কোটি ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা মঞ্জুরি দাবি উপস্থাপন করে। এতে ছাঁটাই প্রস্তাব দেন আটজন সংসদ সদস্য। ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সাংসদ পীর ফজলুর রহমান বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দুর্নীতিগ্রস্ত। বালিশ নিয়ে তাদের দুর্নীতির ভয়াবহ রূপ প্রকাশ পেয়েছে। সম্পূরক বাজেটে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলে সেটাও দুর্নীতিতে যাবে।
বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, রূপপুরের দুর্নীতি সারা দেশকে নাড়া দিয়েছে। সবখানে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। দুর্নীতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
এসবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজন বালিশতত্ত্ব নিয়ে এলেন। পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে বালিশ নিয়ে যে ঘটনা। এখন কথা হচ্ছে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তাঁর কিছু পরিচয় আমি পেয়েছি। এক সময় সে বুয়েটে ছাত্রদলের নির্বাচিত ভিপিও নাকি ছিল। যেহেতু ভদ্রলোক নাই, নাম বলতে চাই না। তাঁকে সেখান থেকে সরানো হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাজেট উপস্থাপন এবং সম্পূরক বাজেট এ নিয়ে অনেক আলোচনা অনেক কথা বাইরে হচ্ছে ভেতরে হচ্ছে। অনেকে এমন বলছেন এ বাজেট কিছুই না। যারা এ ধরনের মানসিকতা নিয়ে কথা বলছেন তাদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন, বাজেট যদি সঠিকই না হবে তাহলে মাত্র ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ এত উন্নতি করল কীভাবে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা কথা এসেছে, ব্যাংকে টাকা নেই। ব্যাংকে টাকা থাকবে না কেন? অবশ্যই টাকা আছে। লুটে খাওয়ার টাকা নাই। যারা লুট করে নিয়ে গেছে তাদের আমরা চিনি। অনেকেরই তো প্রচুর টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে আর কোনোদিন দেয়নি, দেশান্তর হয়ে পড়েছে অথবা দুর্নীতির দায়ে কারাগারে বন্দি। এ রকম বহু ঘটনা আছে। সময় আসলে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে পারব।’
সংসদে অনুপস্থিত মন্ত্রীদের পক্ষে মন্ত্রণালয়গুলোর সম্পূরক বাজেট পাশের জন্য উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। সম্পূরক বাজেট পাশ নিয়ে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার।’
পরে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী নির্দিষ্টকরণ বিল উত্থাপন করেন, যা সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। ফলে চলতি অর্থ বছরে ১৫ হাজার ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট পাস হয়।