অনির্বাচিত সরকারের বাজেট দেওয়ার নৈতিক অধিকার নেই : খসরু
অনির্বাচিত সরকারের বাজেট দেওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এটি বিএনপির কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া নয়। দলীয়ভাবে বিএনপির আগামীকাল শুক্রবার প্রতিক্রিয়া দেবে বলে জানা গেছে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র অনির্বাচিত সরকারের দেশ বাংলাদেশ। এই অনির্বাচিত সরকারের বাজেট দেওয়ার নৈতিক অধিকার নেই। কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধও নয়।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী খসরু বলেন, দেশের অর্থনীতি কিছু সংখ্যক মানুষের কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। তারা বাজেট প্রণয়ন করছে। তারা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। আবার তারাই সরকার পরিচালনা করছে।
আমীর খসরু বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঋণ নির্ভর বাজেট দিতে হচ্ছে। এখন যে এক মিলিয়নের বাজেট তিন মিলিয়ন দেওয়া হচ্ছে, এই টাকা আমার-আপনার পকেট থেকেই নেওয়া হবে। করের মাধ্যমে, ভ্যাটের মাধ্যমে বা অন্যান্য মাধ্যমে এই টাকা সরকার মানুষের পকেট থেকে কেটে নেবে।
ধনী ও সুবিধাভোগী শ্রেণির কথা চিন্তা করেই প্রস্তাবিত বাজেট দেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হবে না। প্রস্তাবিত বাজেটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ওপর নতুন করে ঋণ ও করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে যেমন জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ বাজেটে ও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
এই বাজেটের ফলে দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি ঋণনির্ভর হয়ে পড়বে, এই ঋণ শোধ দিতে দেশের মানুষের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। নাগরিকদের ভুগতে হবে চরমভাবে। বলছিলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৮.২০ শতাংশ। ঘাটতি এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৫.৫ শতাংশ। ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা হবে। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা। অনুন্নয়ন ব্যয় তিন লাখ ২০ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে প্রস্তাবিত বাজেট ১২ দশমিক ৬১ শতাংশ বড়। ৩০ জুন এই বাজেট পাস হবে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিকেল সোয়া ৩টার দিকে জাতীয় সংসদে বক্তব্য শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়লে অর্থমন্ত্রীর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পিকারের অনুমতি নিয়ে নিজেই বাজেট বক্তব্য দেন।